জেলা

নার্সিং হোমের টাকার চাপ, ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী রোগী

শিলিগুড়ি: নার্সিংহোমের চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক রোগী। শিলিগুড়ির এক নামী বেসরকারি নার্সিংহোমের ঘটনায় কাঠগড়ায় কর্তৃপক্ষ। রোগীর যত্ন নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সেখানে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।অষ্টমীর দিন নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন কাওয়াখালির বাসিন্দা বছর চল্লিশের রমানাথ করাতি। তাঁকে ভরতি করানো হয় একটি নামী বেসরকারি নার্সিংহোমে। তাঁকে দু’দিন আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। পরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সাধারণ বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। ইতিমধ্যেই নার্সিংহোম তাঁর চিকিৎসা বাবদ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বিল করে বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের সদস্যদের। মাঝে ছুটি থাকায় সেই টাকা জোগাড় করতে দেরি হয়ে যায়। বিলের অঙ্ক শুনে রমানাথবাবু নিজে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ইএসআইয়ের আওতায় থাকলেও, ১০ লক্ষ টাকার বেশিরভাগটাই ব্যক্তিগতভাবে দিতে হত বলে জানিয়েছে পরিবার। তাই তাঁরা চাইছিলেন, রমানাথবাবু একটু সুস্থ হলে, তাঁকে অন্য হাসপাতালে ভরতি করাতে। কিন্তু অভিযোগ, এই নার্সিংহোমের তরফে তাঁকে ছাড়া হচ্ছিল না। উপরন্তু পরিবারকে জানানো হয়েছিল যে আরও ১৫দিন রমানাথবাবুকে রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। এসব শুনে রমানাথবাবু নিজেও ছুটি চাইছিলেন। কিন্তু তাঁর বা তাঁর পরিবারের আবেদনে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর আজ সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ আচমকাই চারতলার শৌচালয়ের জানলা থেকে ঝাঁপ দেন রমানাথ করাতি। মাঝের একটি টিনের শেডে ধাক্কা খেয়ে একেবারে নিচে আছড়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, সকাল সাড়ে ছ’টায় এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলেও, তাঁদের খবর দেওয়া হয় প্রায় ৩ ঘণ্টা পর, সকাল সাড়ে নটা নাগাদ। এরপর তাঁরা নার্সিংহোমের উপস্থিত হলে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসায় জড়ান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নার্সিংহোমে যান শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি বিজিত রাজ ভুণদেশ, ডিসিপি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।