দেশ

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র ভর্তিতে সরকারি নির্দেশ নিয়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়াল মার্কিন আদালত

 হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টার উপর বৃহস্পতিবার আদালত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৷ মার্কিন জেলা বিচারক অ্যালিসন বুরোস গত সপ্তাহে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের উপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ এর আগে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইভি লিগ স্কুলকে মামলা চলাকালীন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় আদালত ৷ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সচিব ক্রিস্টি নোয়েম ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজের ক্যাম্পাসে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার ক্ষমতা প্রত্যাহার করার পরই হার্ভার্ড শুক্রবার ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, “হার্ভার্ড আমাদের আন্তর্জাতিক ছাত্র এবং স্কলারদের অধিকার রক্ষার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ৷ আমাদের সদস্যরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক মিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যাদের উপস্থিতিতে আমাদের দেশ উপকৃত হবে ৷” এর আগে ক্রিস্টি নোয়েম হার্ভার্ডকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছিলেন, তারা আর কোনও বিদেশি পড়ুয়াকে ভর্তি করতে পারবে না। একইসঙ্গে হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামের (SEVP) আওতাভুক্ত আইভি লিগ প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেশনও তৎক্ষণাৎ বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ একই সঙ্গে ৭২ ঘণ্টা সময়ের ও ৬টি শর্ত দিয়ে জানানো হয়, এগুলি পূরণ করলে তবেই ক্ষমতা ফেরৎ পাবে হার্ভার্ড ৷ বুধবার, ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য হার্ভার্ডের সার্টিফিকেশন প্রত্যাহারের জন্য একটি নতুন চেষ্টা শুরু করেছে । ভারপ্রাপ্ত ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর টড লিয়ন্স একটি চিঠিতে জানিয়েছেন, সরকার হার্ভার্ডকে জবাব দেওয়ার জন্য 30 দিন সময় দিয়েছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের মধ্যে আনা হয়েছে, তা হল হার্ভার্ড বিদেশি সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখছে এবং ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে ব্যর্থ হয়েছে ৷ বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি নিয়ে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধ বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এপ্রিল মাসে, নোয়াম স্কুলে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন রেকর্ড দাবি করা হয়েছিল ৷ একই সঙ্গে পড়ুয়াদের শৃঙ্খলা ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ সম্পর্কিত বিষয়েও রেকর্ড চাওয়া হয়েছিল ৷ নোয়াম জানিয়েছিলেন, এটি হার্ভার্ডের ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগের হিসেব ছিল। হার্ভার্ড জানিয়েছে, এই বিষয়গুলি তারা মেনে চলছে ৷ কিন্তু, ২২ মে নোয়াম একটি চিঠি পাঠিয়ে জানায় যে, তা তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে । হার্ভার্ড তাদের দায়ের করা মামলায় যুক্তি দিয়েছে, সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা থেকে স্কুলগুলিকে বাদ দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক পদ্ধতি এবং নিয়মকানুন অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে ৷ যার মধ্যে রয়েছে স্কুলগুলিকে আপিল করার সুযোগ দেওয়া এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে ৩০ দিনের সময়সীমা । হার্ভার্ডই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, যারা সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ৷ তাদের দাবি, এর ফলে স্বায়ত্তশাসন প্রক্রিয়া বিপদের মুখে পড়বে ৷ মামলায়, হার্ভার্ড সরকারকে রাজনৈতিক দাবি প্রত্যাখ্যান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অভিযোগও করেছে ৷