ঈশিতা উপাধ্যায়ঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলে ঢোকার জন্য ভিআইপি পাস বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন। গত শনিবার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে দর্শনার্থীদের জন্য ভিআইপি পাসের সুবিধে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আপত্তির কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কেন সবাই লাইন দিয়ে পুজো প্যান্ডেলে যাবেন না? মঞ্চ থেকেই তিনি মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং মন্ত্রী সুজিত বসু নির্দেশ দেন, ভিআইপি পাসের ব্যবস্থা বন্ধ করার জন্য। এরপর থেকেই চিন্তিত ছিল পুজো কমিটিগুলি। অবশেষে এ বিষয়ে একটি সমাধান ভাবেন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি’-র কর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সংস্থার কর্তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব রাখেন ভিআইপি পাসের বদলে যদি ‘গেস্ট’, ‘মেম্বারশিপ’ অথবা ‘ক্লাব ইনভাইটি’-র মতো কার্ডের ব্যবস্থা করা যায়। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি’-র কর্তাদের এই অনুরোধে সিলমোহরও পড়ে। ফোরামের অনুরোধে প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী এবং শিশুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ‘ক্লাব ইনভাটি’ পাস চালু করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। ওই পাস স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘এই তিন ক্যাটেগরির মানুষ ছাড়া কেউ এই পাস ব্যবহার করতে পারবেন না’। আজ কলকাতা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। ভিআইপি পাস এক্কেবারে বাতিল হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে বহু পুজো কমিটির কর্তাদের। তাঁদের বক্তব্য, ভি আই পি কার্ডের প্রথা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলোকে স্পন্সরদের সাহায্য নিয়ে পুজোর খরচের টাকা তুলতে হয়। কাজেই, সেই সব কর্পোরেট কর্তাদের অন্যদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়াতে বললে তা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি’ সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি পুজো কমিটি গড়ে সর্বোচ্চ ২০০০ ভিআইপি পাস বিলি করে। সর্বনিম্ন এই সংখ্যাটা ৩০০ কিংবা ৫০০-তেও দাঁড়ায় অনেক ক্ষেত্রে। যা মূলত সদস্য বা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেই বিলি করা হয়। প্রায় সব পুজো কমিটির কর্তারা একটি বিষয়ে একমত যে, ভিআইপি পাসের এই সুবিধে হঠাত করে তুলে দেওয়াও সম্ভব নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, সে কথা মাথায় রেখে ভিআইপি পাসের বিকল্প পথ ভাবা হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় বারোয়ারী পুজোর সংখ্যা ২২০০। তার মধ্যে ফোরামের অন্তর্ভুক্ত ৪০০টি পুজো কমিটি। সংগঠনের সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের যা নির্দেশ দেওয়া হবে, কলকাতার সব পুজো কমিটি তা মেনে চলবে’। ইতিমধ্যেই, শহরের বহু পুজো কমিটি তাঁদের এ বছরের পুজো পাস ছাপিয়ে ফেলেছে, আবার অনেকে ছাতে দিয়েছেন, শিধু হাতে পাওয়ার অপেক্ষা। তবে সে সবই এখন বাতিলের খাতায়।