কলকাতা

রাজ্য সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার চক্রান্ত! স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু পুলিশের, গ্রেফতার ১

স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনার মাঝেই এবার প্রকাশ্যে বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ! সেই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসার পর এবার স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। সেই মামলাতেই গড়ফার এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জীব দাস ওরফে বুবলাই। শুধু তাই নয়, ডাক্তারদের ধরনাস্থল আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে স্বাস্থ্যভবনের সামনে ম্যারাথন ধরনায় জুনিয়র ডাক্তাররা। গতকাল, বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের ৩০ জন প্রতিনিধি। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু লাইভ স্ট্রিমিংয়ের শর্ত মানতে রাজি ছিল না সরকার, ফলে সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। আজ, শুক্রবার ফেসবুকে পোস্ট করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানান, এক বামপন্থী যুব সংগঠন ও এক অতি বাম সংগঠনের ভংয়কর চক্রান্ত করেছে ডাক্তারদের ধরনায় হামলা চালানোর। তাঁর নিশানায় রয়েছে বিজেপিও।  শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল দাবি করেন, ‘‘ভয়ঙ্কর চক্রান্তের অভিযোগ আসছে। বলা ভাল, ভয়ঙ্কর অভিযোগের চক্রান্ত ফাঁস হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চলার সময় দু’-তিনটে শিবির হামলা করার ছক কষেছিল।’’ রাজ্য সরকার এবং মমতাকে বিড়ম্বনায় ফেলতেই জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় হামলা করার ছক কষা হয়েছিল বলে অভিযোগ কুণালের। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের দাবি, এই হামলার ছকের নেপথ্যে রয়েছে বামপন্থী যুব সংগঠন, অতিবাম যুব সংগঠনের এক জন। পাশাপাশি জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না-অবস্থানে বিজেপির যুবনেতাদের অবাধ যাতায়াত শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ কুণালের। শুক্রবার তিনি একটি ফোনালাপের অডিয়ো প্রকাশ করেন। সেখানে দুই ব্যক্তির মধ্যে কিছু কথোপকথন শোনা যায়। কুণালের দাবি, ‘‘ওদের (হামলার ছক কষছে বলে অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে) শিবির সূত্রেই খবর আসছে।’’ কুণালের প্রকাশ করা অডিয়োতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘সাহেব অর্ডার করেছে সল্টলেক ওড়ানোর জন্য।’’ দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন, ‘‘অর্ডার হলে করে দে।’’ জবাবে প্রথম ব্যক্তি, ‘‘যারা পার্টনার আছে সবাই প্রশ্ন করছে?’’ দ্বিতীয় ব্যক্তি বলছেন, ‘‘কিছু ভেবেই তো বলেছে।’’ তা শুনে প্রথম ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমি এত বছর এই কাজ করেছি, কোনও দিন ভয়ডর লাগেনি। কিন্তু এখন এটাতে বিবেকে লাগছে। করাটা কি ঠিক হবে? ওরা তো লোকের জীবন বাঁচায়।’’ ফোনালাপ এখানেই শেষ নয়। এর পরই দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম ব্যক্তির উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোকে তো ফাইট টু ফিনিশ করতে বলেনি।’’ প্রথম ব্যক্তির জবাব, ‘‘ছেলেরা মদ খেয়ে যায়। মারতে গিয়ে বেহাত যদি কিছু হয়ে যায়, সেটা তো চিন্তার বিষয়।’’ শুনে দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন, ‘‘সেটা ওকে বল, আমার এমন মনে হচ্ছে কী করব?’’ প্রথম ব্যক্তি বলেন, ‘‘বাপ্পাদাকে পার্সোনালি জিজ্ঞেস করেছিলাম। বাপ্পাদা বলল, জানোয়ার হয়ে যায়নি এখনও।’’ দ্বিতীয় ব্যক্তির নির্দেশ, ‘‘ওই মতো করেই কর।’’ দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন, ‘‘দাদু বলছে, নবান্নে মিটিং হয়নি। ওরা তো সল্টলেকে ফেরত চলে আসছে। ভাববে শাসকেরা মারটা মেরেছে।’’ তার পরই দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম ব্যক্তির উদ্দেশে বলেন, ‘‘কী বলল কথাটা বুঝেছ? বলছে, পুরো দোষটা দিয়ে আরও অশান্তিটা পাকানো যাবে। তবে কলকাতার কাউকে দিয়ে নয়। বাইরের লোক।’’ সব শুনে প্রথম ব্যক্তি বলেন, ‘‘ঠিক আছে দেখছি। কী করব? মাথা ফাটানোটা কি ঠিক হবে?’’ শেষে দ্বিতীয় ব্যক্তি বলেন, ‘‘দেখ খানিকটা যদি কিছু করা যায়।’’