কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু অভিষেকের। এদিন বামনহাটে মাধাইকাল কালীবাড়িতে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন অভিষেক। কেন্দ্র বকেয়া না মেটালে আবাসের টাকা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পথে জনসংযোগে বাসিন্দাকে আশ্বাস দেন, তাঁবু থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে মন্দিরে যান, মেটান সেলফির আবদারও, শোনেন অভাব অভিযোগ। কর্মসূচি শুরুর আগে তাঁবুতে বিএসএফের গুলিতে নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। দিনহাটায় জনসংযোগের প্রথম অধিবেশেন পঞ্চায়েতর প্রার্থী বাছাই নিয়ে বার্তা দেন। সেই সভা থেকেই তিনি আমজনতাকে জানালেন ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭ নম্বরে ফোন করে প্রার্থীর নাম জানাতে। নিজ নিজ এলাকায়, নিজ নিজ বুথে তাঁরা কাকে প্রার্থী হিসাবে চান সেটাই জানাতে বলেছেন অভিষেক। এদিন জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘গরমে সবার একটু কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আগামী ৫ বছর মানুষের পঞ্চায়েতের কথা মাথায় রাখতে একটু শুনতে হবে। দু-মাস বন্ধু-বান্ধব, সংসার সমস্ত কিছু ফেলে রেখে আপনাদের কাছে এসেছি। কোনও শাসকদল এভাবে সভা করে না। রাজনৈতিক কথা বলতে আসিনি। সারাবছর শোনেন রাজনৈতিক কথা শোনেন। আজ নিজেদের প্রার্থী নিজেরা বাছাই করবেন। আগামী ৫ বছর দলমত নির্বিশেষে আপনার পাশে কে থাকবে তার বিচার করুন আপনারাই।’ সাংসদের স্পষ্ট বার্তা, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এখন দেড় বছর আগে। প্রয়োজন ছিল না রাস্তায় নামার। কিন্তু কোনও এমএলএ বা এমি কাজ করতে চাইলেও পঞ্চায়েতে সঠিক লোক না থাকলে তা সম্ভব হবে না। উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই এই ভোট হবে। পঞ্চায়েতে ধর্মীয় ভাবাবেগে ভোট নয়। তাই আপনাদের প্রার্থী বাছাই করতে এসেছি। একবার কলকাতা থেকে বেরিয়েছি আর মধ্যেখানে বাড়ি যাব না। একেবারে সাগরে গিয়ে শেষ করব।’ অভিষেক আগেই জানিয়েছেন, ‘এই কর্মসূচিতে আমরা মানুষের কাছে গিয়ে জানতে চাইছি, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে আপনারা কাদের প্রার্থী চাইছেন। দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও রক্তপাতহীন নির্বাচন অনেকেই চাইছেন। আমিও সেটাই চাই। কিন্তু এটা করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে, সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করা। যদি সঠিক প্রার্থী নির্বাচন না হয়, এই কাজে আমরা কখনও সফল হব না। যদি মানুষ আশীর্বাদ না-করে, তাহলে ১০ হাজার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করলেও সুষ্ঠু নির্বাচন ও দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত হবে না। তাই মানুষের কথা শুনতে, মানুষের মতামত শুনতে যাচ্ছি। মানুষ কাদের পঞ্চায়েতে দেখতে চান, সেই নাম যাতে সঠিক ভাবে দলের কাছে পৌঁছতে পারে তার জন্যই এই কর্মসূচি।’ প্রসঙ্গত, সোমবারই কোচবিহার গিয়ে পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারে পৌঁছে হেলিপ্যাড থেকে পায়ে হেঁটে মদনমোদন মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন তিনি। কোচবিহারে পা দিয়েই অভিষেক বলেন, ‘কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ’। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় কিছু রাজনৈতিক দল আছে, যাঁরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে যে শব্দবন্ধ ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গ, আমি এই শব্দবন্ধটার ঘোর বিরোধী। আমি বলছি, বাংলায় গৌড়বঙ্গ, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ বলে কিছু নেই। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ’।