রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রশ্নের মুখে কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি রাষ্ট্রপতির বদলে দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে উল্লেখ করেন। অধীরের এই মন্তব্য ঘিরেই বৃহস্পতিবার উত্তাল হয় লোকসভা। শাসক বিজেপি এবং বিরোধী কংগ্রেস সাংসদদের মধ্যে তীব্র কথা কাটাকাটি হইহল্লা শুরু হয়। অধীরকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন, দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ও স্মৃতি ইরানি। এই হট্টগোলে মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন। অধীরের দাবি, গতকাল সংসদের বাইরে ধরনা চলাকালীন এক সাংবাদিককের প্রশ্নের জবাবে মুখ ফসকে রাষ্ট্রপত্নী শব্দটি বেরিয়ে যায়। এটা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। বিজেপির বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি একটা সাংবিধানিক পদ৷ পুরুষ বা মহিলা যিনি ওই পদে বসেন তাঁকে রাষ্ট্রপতি বলা হয়৷ তাই ‘রাষ্ট্রপত্নী’ শব্দবন্ধ ব্যবহারের মাধ্যমে অধীররঞ্জন চৌধুরী দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের অমর্যাদা করেছেন৷ সেই সঙ্গে দ্রৌপদী মুর্মুকে অপমান করেছেন৷ যদিও অধীরের সাফাই, তিনি মুখ ফসকে ওই কথা বলে ফেলেন৷ তার আগে রাষ্ট্রপতিই বলেছেন৷ কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমি বাঙালি৷ হিন্দিতে অত সরগড় নই৷ একটা ভুল হয়েছে৷ সেটা মেনে নিয়েছি৷ আমার ভিডিয়োটা আগে দেখুন৷ আগে তিনবার রাষ্ট্রপতিই বলেছি৷ তারপর রাষ্ট্রপত্নী বলে ফেলি৷’ তবে বিজেপির কাছে ক্ষমা চাইবেন না বলে জানিয়ে অধীর বলেন, ‘ওরা তুচ্ছ ব্যাপারকে বড় করে তুলতে চাইছে৷ এই দুর্নীতিবাজদের কাছে ক্ষমা চাইব না৷ রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাইব৷’ এদিকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ ইস্যুতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়৷ কংগ্রেস সভানেত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে লোকসভার ভিতর স্মৃতিই সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন৷ এদিন অধিবেশন স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সোনিয়া বিজেপি সাংসদ রমাদেবীর সঙ্গে কথা বলতে যান৷ তিনি জানান, অধীর চৌধুরী তাঁর মন্তব্যের জন্য ইতিমধ্যে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন৷ তাহলে কেন তাঁর নাম টেনে আনা হচ্ছে? সূত্রের খবর, সেই সময় স্মৃতি এগিয়ে এসে বলেন, ‘ম্যাডাম আমি আপনার নাম নিয়েছি৷’ তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দিকে মুখ ঘুরিয়ে সোনিয়া সপাটে উত্তর দেন, ‘আমার সঙ্গে কথা বলতে এসো না৷’ তাতে মেজাজ হারান স্মৃতি৷ সোনিয়াকে দু-চার কথা শুনিয়েও দেন৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে আশেপাশের মহিলা সাংসদরা এসে দু’জনকে সরিয়ে নিয়ে যান৷