মঙ্গলবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকী সভা থেকেই মুখ্যমন্তড়ী জানিয়ে দিলেন যে এবার সরকারি অনুদান ৬০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। সঙ্গে তিনি আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন যে, ‘কালকেই জনস্বার্থ মামলা ঠুকে দেবে’। এই আশঙ্কা কিন্তু অমূলক নয়। চলতি সপ্তাহেই এই অনুদান নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। অন্তত সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপুজোয় সরকারের তরফে পুজো কমিটিগুলির পাশে থাকছেন মমতা। প্রথমে কমিটি পিছু ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। গত বছরে সেই টাকার পরিমাণ বেড়ে হয় কমিটি পিছু ৬০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে মোট ৪২ হাজার ২৮টি পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। সেটাই এবছর বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকে ২৮০ কোটি টাকা খরচ হতে চলেছে। আর এখানেই বঙ্গ বিজেপির প্রশ্ন, টানাটানির সংসারে কেন এত টাকা অনুদান দেওয়া হবে? প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে পুজো অনুদান কেন দেওয়া হবে তা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। অনুদানে বাধা না দিলেও কিছু শর্ত আরোপ করেছিল আদালত। কারা অনুদান পাবে এবং কী ভাবে সেই অর্থের হিসাব দিতে হবে তা ঠিক করে দিয়েছিল আদালত। এ বারেও বিষয়টা আদালতে যেতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তবে এবার তিনি সুর বেঁধে দিয়েছেন এই প্রসঙ্গে। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘অনুদান ঘোষণা করলে তো আবার কোর্টে চলে যাবে কেউ কেউ। আমি জানি কিছু কিছু আরশোলা বসে আছে বাইরে। বলবে আমরা ক্লাবগুলোকে কিনতে চাইছি। কালকেই জনস্বার্থ মামলা ঠুকে দেবে। আমরা টাকাটা এই কারণে দিই যে ক্লাবগুলো সরকারের প্রকল্পগুলির প্রচার করে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করে। প্রথমে আমরা শুরু করে ছিলাম ২৫ হাজার টাকা দিয়ে। কোভিডের কারণে ক্লাবগুলো সংকটে পড়েছিল। তাই ২০২১ সালে আমরা দিয়েছিলাম ৫০হাজার টাকা করে। তার পর গত বছর ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছিলাম। এখন কোভিড নেই। এবার তাহলে হাফ করে দিই?’ মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলতেই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম জুড়ে ‘না দিদি না দিদি’ বলে ক্লাব কর্তারা হই হই শুরু করে দেন। মমতা তখন ফের হেসে বলেন, ‘হাফ করে দিই এবার? তাহলে ওই কথাই রইল। পুজো কমিটিগুলো এবার ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান পাবে।’ মমতা এই ঘোষণা করতেই হাততালিতে ফেটে পরে নেতাজি ইনডোর। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিল বাবদ পুজো কমিটিগুলিকে মাত্র এক তৃতীয়াংশ মাশুল দিতে হবে। আর দমকলের জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না। আর এই অনুদান ছাড়া পরিবহণ, পর্যটন ও ক্রেতা সুরক্ষা দফতরগুলি বিজ্ঞাপণ পায় প্রতিবছর। এবারও তা পাবে।