পাহেলগাঁও হামলায় মৃত বাংলার বিতান অধিকারীর স্ত্রী নাকি বাংলাদেশি! ভুয়ো পরিচয় পত্র তৈরি করে এদেশে থাকছিলেন তিনি, এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন মৃতের দাদা বিভু অধিকারী। এখানেই শেষ নয়, ভুয়ো নথি সংক্রান্ত মামলা চলছে সোহিনীর বিরুদ্ধে, জানালেন তিনি। যদিও এবিষয়ে এখনও সোহিনীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জঙ্গিদের গুলি ঝাঁজরা করে দিয়েছে মঙ্গলবার দুপুরে। বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরেছেন বিতান অধিকারীর কফিনবন্দি দেহ। শহরে পৌঁছেই শুভেন্দু অধিকারীর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের স্ত্রী সোহিনী। তারপরই থেকেই একাধিক কারণে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এবার ভাইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করলেন বিতানের দাদা বিভু অধিকারী। তিনি দাবি করেছেন, সোহিনী আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁর ভারতের যা পরিচয় পত্র রয়েছে সেসবই ভুয়ো। নথি সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই ২০২৩ সালে ফ্লোরিডা থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন সোহিনী। তারপর থেকে বৈষ্ণবঘাটার বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন বধূ। সোহিনীর বিরুদ্ধে ভুয়ো পাসপোর্ট-সহ ফৌজদারি ধারায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও দাবি করলেন তিনি। ভারতে থাকতে চেয়ে সোহিনীর করা আবেদনও খারিজ হয়েছে বলেই জানালেন বিভু। এখানেই শেষ নয়, সোহিনীদেবীর মায়ের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক বিতানের দাদা। তাঁর অভিযোগ, তিনি ভুয়ো নথি তৈরি করে বৈষ্ণবঘাটায় বাড়ি কিনেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ধরা পড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে ফিরে যান। ভুয়ো নথি দেখিয়েই নাকি পরিবারের সদস্যরা বিতানের সঙ্গে সোহিনীর বিয়ে দেয় পরিবার। বিষয়টা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই বিতান-সোহিনীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে বাবা, মা ও দাদার। আলাদা থাকতে শুরু করেন। ভাইয়ের জন্য চোখের জল ফেলে এই কঠিন সময়েও সংসারের ভাঙনের জন্য সোহিনীকেই দায়ী করেছন বিভু।
অন্যদিকে যা হয়েছে আর জি করে, তা হচ্ছে পহেলগাঁওতে। আরজিকর তরুণী চিকিৎসকের মৃ্ত্যু আবেগকে কাজে লাগিয়ে টাকা তোলার পর, এবার জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত বিতান অধিকারীকে সামনে রেখেও টাকা তুলতে শুরু করল একদল! সমাজমাধ্যেম ছড়িয়ে পড়েছে ‘ফান্ড রেইজার’। তলায় লেখা ‘ইন লাভিং মেমোরি অফ বিতান অধিকারী’। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪৩৪ মার্কিন ডলার উঠে গিয়েছে। এই টাকা কে পাবে? কোথায় যাবে? তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। উল্লেখ্য, বিতানের স্ত্রীর মতো তাঁর অশীতিপর মা-বাবাও ছিলেন বিতানের উপর নির্ভরশীল। বিদেশ থেকে বিতানের পাঠানো টাকাতেই বৃদ্ধ মা-বাবার সংসার চলত। ছেলের মৃত্যুর খবর সামনে আসতে অথৈ জলে তাঁরা। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “প্রয়াত বিতান অধিকারীর পরিবারের জন্য দুই সরকার যদি কিছু ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে, তা যেন শুধু পুরোটা তাঁর স্ত্রীকে দেওয়া না হয়। বিতানের বৃদ্ধ বাবা-মায়েরও সাহায্য দরকার। ওঁদের পরিবারের যা সমীকরণ, তাতে এই দুজন ঘোরতর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।” এদিকে বৃহস্পতিবার নিজের বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে কিছুই বলেননি প্রয়াত বিতানের স্ত্রী সোহিনী। যাননি সেখানে। সোশাল মিডিয়াতে অনেকে দাবি তুলেছেন, জঙ্গি হানায় মৃতদের সাহায্য করতে হলে শুধু একা বিতান কেন, বৃহস্পতিবার যে জওয়ান জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন নদিয়ার সেই সেনা জওয়ান ঝন্টু আলিকেও সাহায্য করা হোক। অনলাইনে যাঁরা টাকা তুলছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ দু’কোটি টাকা তোলা।