দীর্ঘ ১০বছরে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানে সেভাবে ফল করতে পারেনি তৃণমূল সরকার। যার ধাক্কা মাঝে মাঝে ভোটবাক্সে পড়ে যুব সমাজের কাছ থেকে। শুনতে হয় কথা, তাই তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন তাঁর লক্ষ্য হবে শিল্প যার মাধ্যমে বাড়বে কর্মসংস্থান। আজ দুর্গাপুরে ৩০০ কোটি টাকার পলিফিল্ম কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সেই কথাই আরও একবার শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ দুর্গাপুরে ৩০০ কোটি টাকার পলিফিল্ম কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সেই কথাই আরও একবার শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এদিন একটি পলিফিল্ম কারখানার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থানের উপরই জোর দেওয়া হবে, এটাই মূল লক্ষ্য এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের। এদিন দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘অতিমারি পরিস্থিতিতেও ৪০ শতাংশ দারিদ্র কমিয়েছি। দেশে যখন কর্মসংস্থান কমছে তখন রাজ্যে নিয়োগ বেড়েছে ৪০ শতাংশ। রাজ্যে ডেটা সেন্টার ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করা হবে। নতুন ডেটা ইন্ডাস্ট্রি নাীতিতে রাজ্যের নতুন লক্ষ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং সংগ্রহের হাব হিসেবে বাংলাকে গড়ে তোলা। যাতে পূর্ব ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভূটানেরও তথ্য সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা বাংলা মেটাতে পারে। ডেটা সেন্টারগুলিকে সবরকম সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। অনুমোদন থেকে শুরু করে সহজ শংসাপত্র পাওয়ার ব্যাপারেও সাহায্য করা হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও জানিয়েছেন, ”আশা করছি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৪০০ মেগাওয়াটের ডেটা সেন্টার তৈরি হবে বাংলায়। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ২৪ হাজার চাকরি হবে। ইথানলের মতো জৈব জ্বালানি তৈরি হবে বাংলায়। ভাঙা চাল দিয়ে তৈরি হবে জ্বালানি। ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ কাজ পাবেন। রাজ্যে দেড় হাজার কোটির বিনিয়োগ আসবে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘সরকার ভর্তুকি দেবে, ব্যাঙ্ক ঋণ দিচ্ছে, পোলট্রিও শিল্প। এই ব্যবসা শুরু করুন। বাইরে থেকে ডিম আমদানি করতে হবে কেন? স্বনির্ভর হোন।’ শিল্পাযণে গুরুত্ব দিয়ে নতুন এমপাওয়ারমেন্ট গ্রুপ তৈরির ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই গ্রুপের প্রধান হবেন মমতাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যাতে চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য –
- এখন আমার ডেস্টিনেশন শিল্প। সামাজিক কর্মসূচিতে এখন আমরা এক নম্বর। এখন আমার নজর শিল্প-কারখানায়।’
- ‘দেউচায় বিশ্বের দ্বিতীয় সব থেকে বৃহত্তম কয়লা খাদান তৈরি করছি। তা থেকে সুবিধা পাবে পুরুলিয়া, হুগলি, বর্ধমান।’
- ‘তাজপুর পোর্টও হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি।’
- ‘ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোর করেছিলাম আমি রেলমন্ত্রী থাকা কালীন। ২ হাজার একর জমি চিহ্নিতকরণের কাজও শেষ।’
- ‘পানাগড় বাদে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে, তাতে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে।’
- ‘জঙ্গলমহল সুন্দরী প্রকল্পে বিনিয়োগ হচ্ছে ৭২ হাজার কোটি টাকা। তাতে কর্মসংস্থান হবে লক্ষ লক্ষ মানুষের।’
- ‘ইথানলের মতো জৈব জ্বালানি তৈরি হবে বাংলায়। ভাঙা চাল দিয়ে তৈরি হবে জ্বালানি। ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ কাজ পাবেন। কৃষকদেরও সুবিধা হবে।’
- ‘দেড় হাজারের বেশি আইটি সংস্থা বাংলায় কাজ করে।’
- ‘এখন আমাদের লক্ষ্য ডেটা স্টোরেজ। নতুন ডেটা ইন্ডাস্ট্রি নীতিতে রাজ্যের নতুন লক্ষ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং সংগ্রহের হাব হিসেবে বাংলাকে গড়ে তোলা। শুধু পূর্ব ভারত নয়, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের প্রয়োজন মেটাবে এটি। আগামী পাঁচ বছরে বাংলায় ৪০০ মেগাওয়াটের ডেটা সেন্টার তৈরি হবে।’
- ‘গত দশ বছরে এক লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে রাজ্যে। প্রস্তাবনা রয়েছে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের। ‘
- ‘বানতলায় চামড়ার কারখানাগুলিতে পাঁচ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। অতিমারীতেও ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান বাড়িয়েছি। এমএসএমই-তে মোট ১ কোটিরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে।’
- ‘শিল্পের কথা মাথায় রেখে একটি নতুন এমপাওয়ারমেন্ট গ্রুপ তৈরি করেছি। আমি নিজে এর চেয়ারম্যান থাকছি। এ ছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন রাজ্যের মন্ত্রীও থাকবেন গ্রুপে। রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পের কী অবস্থা, কতটা আভাব রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে এই গ্রুপ।’
- ‘বাংলায় বিনিয়োগ করুন। আমাদের সরকার শিল্পের পাশে আছে। এ রাজ্য শিল্পে এক নম্বর হবে।’