মালদা

আম গাছে প্রেমিক-প্রেমিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য

হক জাফর ইমাম, মালদাঃ ঘন জঙ্গলে আম গাছে রহস্যজনক অবস্থায় প্রেমিক প্রেমিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়ালো এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে মালদা ইংরেজবাজার থানার নিমাসরাই-এর রেলের ডিজেল সেট সংলগ্ন এলাকায় । প্রেমিক প্রেমিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদের কাছ থেকে তাদের পরিচয় পত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ । উদ্ধার হয়েছে একটি ট্রেনের টিকিটও। মৃতদের  কাছে পড়ে থাকা বই ও ব্যাগ পত্র দেখে মনে করা হয়েছে তারা ছাত্রছাত্রী।  তবে কোন ক্লাসে বা কোন কোন স্কুল বা কলেজে তারা পড়েন । সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে জানতে পারি নি তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা।  কিন্তু মৃতদেহ যে অবস্থায় ছিল তাতে আত্মহত্যা না খুন তা নিয়েও সন্দেহ বাড়িয়েছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের।  পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পূলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,  মৃত যুবক ও যুবতির নাম টিনা ঘোষ (১৮) এবং প্রকাশ হাজরা (১৯)।  উদ্ধার হওয়া পরিচয় পত্র এবং খাতায় লেখা একটি কাগজ দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে মৃত ওই দুইজনের বাড়ি বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার কুসুমগ্রামে।  তবে তারা বর্ধমান থেকে মালদায় কি কারণে এলো এবং এখানে এসে

আত্মহত্যা কেন করতে গেল তা নিয়েও পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে।প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে,  মৃতদেহ দুটি একসঙ্গে গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগানো অবস্থায় একটি আম গাছের ডালে  ঝুলিয়ে। যদিও মৃতদেহের দুজনেরই পা মাটির সঙ্গে কিছুটা স্পর্শ করেছিল। মৃতদেহের পাশ থেকে একটি খাতা উদ্ধার হয়েছে।  যে খাতায় লেখা রয়েছে তাদের বাড়ির ঠিকানা এবং একটি মোবাইল নম্বর । তাতে উল্লেখ করা হয়েছে দুজনের দেহ যেন তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় । এছাড়াও ওই মৃতদেহের পাশ থেকেই উদ্ধার হয়েছে ঠান্ডা পানীয়ের দুটি প্যাকেট । তবে এরা যে প্রেমিক যুগল তা প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ অনুমান করছে।  তবে এত ঘন জঙ্গলের মধ্যে কি কারণে তারা এল।  কীভাবেই বা এই জায়গাটিকে তাঁরা বেছে নিল সেই প্রশ্ন তদন্তকারী অফিসারদের কাছে ঘুরপাক খাচ্ছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন,  এদিন সকালে ডিজেলসেড এলাকার জঙ্গলের  রাস্তা দিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন । সেই সময় আম গাছের ডালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই দুই যুবক-যুবতীকে দেখতে পান।  এরপর এই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়।  খবর দেওয়া হয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশকে । স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, হয়তো দুষ্কৃতীরা এদের লুটপাটের উদ্দেশ্যে এবং ধর্ষণ করার পরে খুন করে থাকতে পারে । পরে হয়তো শ্বাসরোধ করে মারার পর তাদের গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হতে পারে। যদিও স্থানীয়

বাসিন্দাদের এমন দাবি মানতে নারাজ তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা।  সবটাই ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরই বলা যাবে বলে জানিয়েছেন ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। তবে পুলিশের অনুমান,  এরা সম্পর্কে প্রেমিক -প্রেমিকা।  হয়তো বাড়ি থেকে তাদের সম্পর্ক মেনে নেওয়া না কারণে জেলার বাইরে  এসে ফাঁকা জায়গা দেখেই তারা আত্মঘাতী হয়েছে। তদন্তকারী পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন,  ওই প্রেমিক যুগল বর্ধমান থেকে মালদা এত দূরে এসে কেন আত্মহত্যা করতে গেল।  যে মোবাইল নম্বরটি উদ্ধার হয়েছে। সেটি মৃত প্রকাশ হাজরার বাড়ির নম্বর।  সেখানে ফোন করে ঘটনার সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই  জোড়া মৃত্যুর কারণে নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।  ওই যুবতীর সাথে কোনো খারাপ কাজ হয়েছে কিনা তা ময়না তদন্তের রিপোর্টের পরই জানা যাবে । তবে যেভাবে দুইজন গাছে ঝুলছিল তা থেকেই এই মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ অনেকটাই বাড়িয়েছে। ইংরেজবাজার থানার আইসি শান্তনু মৈত্র জানিয়েছেন,  নিমাসরাই-এর ডিজেল সেডে সংলগ্ন এলাকায় এক যুবক যুবতীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।  মৃতদের বাড়ির লোকেরা বর্ধমান থেকে রওনা দিয়েছেন।  তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।   মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে । পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।