দেশ

আর্থিক তছরুপ মামলায় রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে চার্জশিট ইডি-র

অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভাণ্ডারীর সঙ্গে আর্থিক তছরুপ মামলায় কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধির স্বামী রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল ইডি ৷ বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে এই চার্জশিট দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ এই চার্জশিটের শুনানি ৬ ডিসেম্বর । রবার্টকে এ বছরের জুলাইতেই প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জেরা করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা । ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (পিএমএলএ) অধীনে চলতি বছরের জুলাইয়ে রবার্ট বঢরার জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনে বসবাসকারী সঞ্জয় ভাণ্ডারীর আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ মিলেছে ৷ কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধির স্বামীর বিরুদ্ধে চলতি বছরে এটি দ্বিতীয় চার্জশিট ইডি’র ৷ গত জুলাইয়ে গান্ধি পরিবারের জামাইয়ের বিরুদ্ধে হরিয়ানার শিকোহপুরে একটি জমি চুক্তিতে অনিয়মের অভিযোগে জড়িত আর্থিক তছরুপ মামলায় চার্জশিট করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । এবার তাঁর বিরুদ্ধে লন্ডনে বসবাসকারী অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভাণ্ডারীর আর্থিক লেনদেনের যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে ৷ ৫৬ বছর বয়সি বঢরাকে অতীতেও সঞ্জয়ের জমি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি । তবে বৃহস্পতিবার ইডি’র চার্জশিট পেশ নিয়ে বঢরার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ ইডি’র অভিযোগ, লন্ডনের ব্রায়ানস্টন স্কোয়ার এবং গ্রোজভেনর হিল কোর্ট- এই দু’টি বাড়ির প্রকৃত মালিক সঞ্জয় ভাণ্ডারী হলেও আর্থিক যোগসূত্র ছিল বঢরার ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০০৯ সালে ব্রায়ানস্টন স্কোয়ারের সম্পত্তি ভাণ্ডারী কিনলেও টাকার লেনদেন বঢরার মাধ্যমে। তাঁর নির্দেশেই বাড়ির সংস্কার হয়েছিল । অভিযোগ, লন্ডন সফরে ওই বাড়িতেই বহুবার উঠেছিলেন রবার্ট। ২০১৬ সালে আয়কর দফতরের চিঠি থেকেই এই তদন্ত শুরু হয় । পরে ভাণ্ডারীর অফিসে আয়কর হানার সময় যে ডিজিটাল ডেটা মিলেছিল, সেখান থেকেই বঢরার নাম উঠে আসে ৷ ইডি’র দাবি, ই-মেল আদানপ্রদানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ড দামের ব্রায়ানস্টন স্কোয়ার সম্পত্তি কেনা, সংস্কার, লেনদেন, সবেতেই বঢরা ও তাঁর সহকারী মনোজ অরোরার যোগ রয়েছে । যদিও বঢ়রা অস্বীকার করেছেন যে, তিনি লন্ডনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনওভাবেই এই সম্পত্তির মালিক নয় । তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তাঁকে ধাওয়া ও হয়রানি করা হচ্ছে । ২০১৬ সালে দিল্লিতে তাঁর বাড়িতে আয়কর বিভাগের তল্লাশির অভিযান পর লন্ডনে পালিয়ে যান সঞ্জয় ভাণ্ডারী। ২০১৫ সালে কালো টাকা বিরোধী আইনের অধীনে তাঁর বিরুদ্ধে দাখিল করা আয়কর বিভাগের চার্জশিটের ভিত্তিতে ইডি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভাণ্ডারী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে পিএমএলএ-এর অধীনে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় । সঞ্জয় ভাণ্ডারীর মাধ্যমে ব্রিটেনে বেনামি সম্পত্তি কেনা ও আয়কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে ২০২০ সালে রবার্টের বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগ তদন্ত শুরু করেছিল । ২০২৩ সালেই সঞ্জয় ভাণ্ডারীকে ভারতে প্রত্যপর্ণের নির্দেশ দিয়েছিল ব্রিটেনের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েল্লা ব্রেভারম্যান।