কলকাতা

নয়া ওয়েবসাইট চালু রাজ্য নির্বাচনী দফতরের

স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর ঘোষণার পর দেখা গেল ceowestbengal ওয়েবসাইটটি কাজ করছে না ৷ তাই শুক্রবার নয়া ওয়েবসাইট চালু করল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর ৷ গত সোমবার নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গ-সহ 12টি রাজ্যে এসআইআর পর্বের কথা ঘোষণা করে ৷ এরপর থেকেই রাজ্যের নির্বাচন সংক্রান্ত ওয়েবসাইটটি বন্ধ হয়ে যায় ৷ এই বিষয়টি অবশ্য আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর ৷ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, একসঙ্গে বহু মানুষ ওয়েবসাইটটি খোলার চেষ্টা করছিলেন তাই ওয়েবসাইটটি ক্র্যাশ করেছে ৷ রাজ্যে এসআইআর শুরুর ঘোষণা পর থেকে ভোটাররা ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম খোঁজার চেষ্টা করছিলেন ৷ আর তার জেরেই এমন বিপত্তি ৷ এই বিষয়ে গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল ৷ এছাড়া ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করা নিয়ে আরও একাধিক অভিযোগ আসছিল কমিশনের দফতরে ৷ এরপর গতকালই কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ন্যাশনাল ইনফরমেটিক সেন্টার-এর থেকে সমস্ত তথ্য স্টেট সেন্টারে স্থানান্তরিত করার কাজ চলছিল ৷ সেই কাজ শেষ হয়েছে ৷ তাই এদিন ফের আরেকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে নয়া ওয়েবসাইটের ঘোষণা হল ৷ নয়া ওয়েবসাইটটি – https://ceowestbengal.wb.gov.in ৷ আরও জানানো হয়েছে, এই ওয়েবসাইটে 2002 সালের সম্পূর্ণ ভোটার তালিকা পাওয়া যাবে ৷ পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই ওয়েবসাইটে মিলবে ৷ অন্যদিকে, আগামিকাল থেকে শুরু হচ্ছে বুথ স্তরের আধিকারিক বিএলও-দের প্রশিক্ষণ ৷ একদিন হবে এই প্রশিক্ষণ ৷ এরপর আগামী 4 নভেম্বর থেকে 4 ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্মের কাজ করতে হবে এনুমারেটর হিসেবে ৷ তবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের পরেই বিলও-দের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেল ৷ প্রশিক্ষণের জন্য বিধানসভা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে ৷ সেই বিভাজনের ভিত্তিতে সারা রাজ্যে একেকটি ভেন্যুতে চলবে প্রশিক্ষণ ৷ বিএলও-দের নির্বাচনী কাজ করা নিয়ে গত 30 অক্টোবর নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা বা ইআরও-রা ৷

এই নির্দেশিকা অনুসারে আগামী 4 নভেম্বর থেকে 4 ডিসেম্বর পর্যন্ত সমস্ত বিএলও-দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশনের কাজের পাশাপাশি নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাজও করতে হবে ৷ এই সময়ের মধ্যে তাঁদের নির্বাচনী কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে ৷ সব বিএলও-দের ‘on duty’ থাকতে হবে ৷ এই বিষয়ে ভোটকর্মী বিএলও ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, এই কাজটা অত্যন্ত শক্ত ও জটিল ৷ টানা একমাস কাজ করাটা সত্যি খুব কঠিন ৷ কোনও একজন বিএলও-র একদিন শরীর খারাপ হবে না বা তাঁর নিজস্ব কাজ থাকবে না, সেটা হতে পারে না ৷ তাই নির্বাচন কমিশনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত ৷ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “কমিশনের চিঠিতে এটা স্পষ্ট করা হয়নি যে এই একমাসের মধ্যে তাঁরা স্কুলের কাজ করবেন না ৷ কারণ সেই ক্ষেত্রে এমন বহু স্কুল রয়েছে, যেখানে মাত্র একজন শিক্ষকই রয়েছেন ৷ সেই ক্ষেত্রে কি একমাস তাঁরা কোনও স্কুলের কাজ করবেন না ? নির্দেশে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে বলা হয়নি ৷” অন্যদিকে, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের (SUA) সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, প্রায় 94 হাজার বুথ রয়েছে ৷ প্রতি বুথে একজন করে বিএলও নিয়োগের নিয়ম রয়েছে ৷ অর্থাৎ 94 হাজার বিএলও প্রয়োজন ৷ প্রায় 90 শতাংশেরও বেশি শিক্ষকদের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ কিন্তু বিএলওদের বিভিন্ন ভাবে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে ৷ আবার শিক্ষকদের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে ৷ তাই এটা একপ্রকার দ্বিচারিতা ৷ এই নিয়ে বিভিন্ন সময় নির্বাচনের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে ৷ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর, স্কুলের কাজের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশনের কাজ করতে হবে বিএলওদের ৷ এছাড়াও এই একমাস বিএলওরা অসুস্থ হলে বা ব্যক্তিগত কারণে ছুটির আবেদন জানালে তা মঞ্জুর হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই বিষয়ে কোনও নয়া নির্দেশিকা আসবে কি না, তার উপরে ৷ তবে এই বিষয় এখনও কোনও স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়নি ৷