সন্দেশখালিকাণ্ডের ১০ দিন পর ফের রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ফের তল্লাশিতে নামলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। কলকাতা ও সল্টলেকের মোট ১০টি জায়গায় একসঙ্গে অভিযানে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ রেশন দুর্নীতি মামলায় শংকর আঢ্যর গ্রেফতারির পর, একাধিক তথ্য় এসেছে ইডির হাতে ৷ সেই সূত্র ধরে, চৌরঙ্গি লেন, ধর্মতলা, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড ও সল্টলেক সেক্টর ফাইভে তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অরবিন্দ সিংয়ের অফিস সহ শহরের নানা জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ সূত্রের খবর, রেশন দুর্নীতি মামলার অর্থ বিদেশি মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৷ ইডির হাতে বেশ কয়েকজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের নামও এসেছে ৷রেশন দুর্নীতি মামলায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে যায় ইডি ৷ কিন্তু, সেখানে ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপর হামলা চালান স্থানীয়রা ৷ কিন্তু, সেদিনই বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যর বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি এবং তাঁর ভাইয়ের আইসক্রিম কারখানাতেও হানা দেয় ইডি ৷ যে অভিযানে ৫ জানুয়ারি রাতে শংকর আঢ্যকে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা ৷ ইডি সূত্রে খবর, শংকর আঢ্যকে গ্রেফতারির পর একাধিক তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে ৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, রেশন দুর্নীতিতে বিদেশি মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৷আর এই লেনদেনের সঙ্গে সরাসরিভাবে যুক্ত ছিলেন শংকর আঢ্য ৷ বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের সূত্রেই রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের একটি অফিসে গিয়েছে ইডি ৷ জানা গিয়েছে, এই অফিস থেকে বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয় ৷ আর রেশন দুর্নীতির কালো টাকা বিদেশি মুদ্রার মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে ৷ কয়েকজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের নাম উঠে এসেছে ৷ সেই সূত্রে কয়েকজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট অফিসেও হানা দিয়েছে ইডি ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় সেখানে সকাল থেকে তল্লাশি চলছে ৷ একাধিক নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ অফিসগুলির সব কম্পিউটার, ল্যাপটপ-সহ সব বৈদ্যুতিন সামগ্রী নিজেদের হেফাজতে নিয়ে শুরু হয়েছে তল্লাশি ৷ইডি সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতি মামলায় কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ৷ যেখানে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা এই বিশাল অংকের টাকা লেনদেনে সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ ৷ প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে একটি মেরুন ডায়েরি। তাতে পাওয়া বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলেই দাবি ইডি সূত্রে। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ওই ডায়েরিটি। ইডি সূত্রে খবর, তাতে পাওয়া গিয়েছে লেনদেনের হিসেব। সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, অভিজিৎ দাস ইতিমধ্যেই বয়ান দিয়েছেন যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশেই টাকা নিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই ইডি আধিকারিকরা তদন্ত করে সেক্টর ফাইভে শঙ্কর আঢ্যর ওই চার্ডার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট অফিসের খোঁজ পান। সেই মতো এদিন তল্লাশি চালানো হয়েছে ওই অফিসে। ওই অফিসের তলায় নিরাপত্তায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এমনকী মহিলা জওয়ানদেরও সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।