বিনোদন

নজরুল মঞ্চের মাত্রাতিরিক্ত ভিড়, অব্যবস্থা নিয়েই ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠছে, উদ্যোক্তারা পুলিশের বারণ শোনেনি!

প্রয়াত জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (কেকে)। মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের গানের অনুষ্ঠান ছিল তাঁর। অনুষ্ঠান শেষে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মাত্র মিনিট দশেক আগেও মঞ্চ কাঁপাচ্ছিলেন তিনি। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠান শেষ করেন তাঁর নব্বইয়ের দশকের সাড়া ফেলা বন্ধুত্বের গান দিয়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে সব শেষ। যদিও নজরুল মঞ্চের মাত্রাতিরিক্ত ভিড়, অব্যবস্থা নিয়েই ইতিমধ্যেই অভিযোগের আঙুল উঠতে শুরু করেছে। উপস্থিত অনেকেই বলছেন, মঙ্গলবার এই ভিড়ের পরিস্থিতি সামাল দিতে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ এসেছিল। কিন্তু উদ্যোক্তারা পুলিশের বারণ শোনেনি বলেই অভিযোগ। যা সিট ক্যাপাসিটি, তার থেকে দ্বিগুণের বেশি দর্শক ঢোকা নিয়ে পুলিশ আপত্তি করেছিল। কিন্তু উদ্যোক্তারা তা শোনেনি। এরপরই ওই অরাজকতার মধ্যে একটি ছাত্রের বাম হাত ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। আর একজন ছাত্রের ওই ভিড়ের মধ্যে খুব সম্ভবত পড়ে গিয়ে হাত পা কেটে যায়। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল নজরুল মঞ্চে। সূত্রের খবর, গতকাল কেকে মঞ্চে ওঠেন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ। তারপর একটার পর একটা গান গেয়ে যাচ্ছিলেন। মাঝে মাঝে ব্যাকস্টেজে গিয়ে ঘাম মুছে এসে আবার গান ধরছিলেন। ৮টা ৪০ নাগাদ অনুষ্ঠান শেষ হয়। প্রথম থেকেই খুব ভিড় হচ্ছিল। যেখানে আসনসংখ্যা ছিল ২৪৮২, সেখানে ভিড় হয়েছিল প্রায় ৭০০০। ৭টা দরজার ৫টাই খোলা ছিল। মঞ্চের দুদিকেও লোক দাঁড়িয়ে যায়। এসি বন্ধ ছিল না। কিন্তু অত ভিড়ে কাজ করছিল না এসি। দরজা খোলা থাকায়, হাওয়া বেরিয়ে যাচ্ছিল।  এই পরিস্থিতিতে নজরুল মঞ্চে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, এবার এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে, তদন্তে নামছে কেএমডিএ। অন্যদিকে নজরুল মঞ্চে বাঁধভাঙা ভিড়ে অনুষ্ঠান করা যে কতটা কষ্টকর, সেই অভিজ্ঞতাই শেয়ার করলেন সঙ্গীত শিল্পী রুপম ইসলাম। মঙ্গলবার কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে মৃত্যু হয় সঙ্গীতশিল্পী কে কে-র। ইতিমধ্যেই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে উঠে আসছে অনেক প্রশ্ন। মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই রাত থেকেই সোশাল মিডিয়ায় মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পোস্ট হতে থাকে। সেই পোস্টগুলিতেই দেখা যায়, বেলাগাম ভিড় হয়েছিল কে কে-র অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান শেষে কোনওরকমে ভিড় সরিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে নজরুল মঞ্চে প্রায় আড়াই হাজার আসন রয়েছে, সেখানে এদিন সাত হাজারেরও বেশি দর্শক উপস্থিত ছিল বলে অনেকের মত। বাঁধভাঙা ভিড় নজরুল মঞ্চে হলে কী হয়, সে অভিজ্ঞতাই ফেসবুকে শেয়ার করেন রুপম। তাঁর মতে, এসি বন্ধ হয়ে যায়। মঞ্চেও সার বেঁধে দর্শক দাঁড়িয়ে থাকলে দম নেওয়ার ফাঁকটুকুও থাকে না। অভ্যেস না থাকলে এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান করা মুশকিল। কতটা শারীরিক কষ্ট সহ্য করে তাঁদের পারফর্ম করতে হয় সেই অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি।