বিএসএফ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । এই উদ্বেগের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন তিনি । সেই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য কেন্দ্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় । ইতিমধ্যেই বিএসএফের কাজকর্মের সীমা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে জগদীপ ধনকড় লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় জাতীয় সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় ৷ এদিনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিএসএফ নিয়ে সরব হয়েছেন । সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি আশ্চর্য হচ্ছি যে, একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যিনি সংবিধানের প্রতি সত্যিকারের ও আনুগত্য, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নিয়েও কীভাবে বারবার বিএসএফ-কে অপদস্ত করতে পারেন ! বিএসএফ ঠিক সেটাই করে, যার জন্য তাদের নিযুক্ত করা হয়েছে ।’’ শুভেন্দুর এই বক্তব্যের সুরই কার্যত শোনা গিয়েছে জগদীপ ধনকরের চিঠিতে । সেখানে তিনি লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি এবং জাতীয় সুরক্ষার জন্য উদ্বেগজনক । এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে বিএসএফ এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে কি না, তার উপর নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনকে ৷ উত্তর দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের এই প্রশাসনিক বৈঠককে উদ্ধৃত করে রাজ্যপাল মূলত বিএসএফ নিয়ে সরকার পক্ষের মনোভাবের বিরোধিতা করেছেন । সেই বিষয়টিই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন ৷ উল্লেখ্য, গত ৭ ডিসেম্বর প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে ফের বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমাদের ওখানে একটা সমস্যা আছে। বিএসএফ মাঝে মধ্যে ঢুকে যায় গ্রামে গ্রামে। অত্যাচার করারও অভিযোগ আসে। এমনকী ভোটের সময় ভোটের লাইনেও তাঁদের দেখা যায়। তোমরা কি কখনও ওঁদের ডিজির সঙ্গে কথা বলেছে? এটা ডিজি টু ডিজি কথা বলবে। কতগুলি জেলা, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর। বিএসএফের ১৫ কিলোমিটার আসার কথা। সেটাও পুলিশকে জানিয়ে। কিন্তু তা না করে ওরা যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ে।’ এরপরই নাগাল্যান্ড প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নাগাল্যান্ডে দেখেছ তো কী সমস্যা হল! শীতলকুচিতে দেখেছ! কয়েকদিন আগে কোচবিহারে তিন জন গুলিতে মারা গিয়েছে। লোকাল পুলিশকে না জানিয়ে কোনও সংঘাত হোক এটা আমি চাই না। তাই পুলিশকে সতর্ক হতে হবে। আর আমাদের অনেক আইসি ভাবে, না না ওদের ছেড়ে দাও। কেন? বিডিওদেরও আমি বলব, একটু বেশি সতর্ক থাকবেন। কোনও অভিযোগ এলে আইসিকে নিয়ে এলাকায় যাবেন। বলে দেবেন, এটা আপনাদের এলাকার মধ্যে পড়ে না।’ দিন দু’য়েক আগেই নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে ১৪ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ৷ এদিন সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ নাগাল্যান্ড এবং শীতলকুচির ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএসএফের কাজ নিয়ে তিনি যে সজাগ হতে নির্দেশ দিচ্ছেন, এদিন সেটাও স্পষ্ট করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1468886496098676738