একসূত্রে বাঁধা পড়ল মাদ্রিদ ও কলকাতা। ২০২৫-এ মাদ্রিদ বইমেলার থিম কান্ট্রি ভারত। সেই বিষয়কে মাথায় রেখেই কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা কমিটি ও মাদ্রিদ বইমেলা কমিটির মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হল। গত বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পেনে গিয়েছেন। তাঁর সফর চলাকালীনই মাদ্রিদ ও কলকাতা বইমেলার মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে সেখানকার বইমেলায় বাংলার লেখক, প্রকাশকদের জন্যও আলাদা স্টলের ব্যবস্থা থাকবে। স্পেন ও বাংলা নিজেদের মধ্যে পারষ্পরিক সংষ্কৃতি ও সাহিত্যের আদান-প্রদান করবে। আর সেই ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিলেন মমতা। জানা গিয়েছে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে চায় সেই দেশ। ইতিমধ্যেই স্প্যানিশ ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একাধিক সাহিত্য অনুবাদ করা দাবিও করেছে তারা। মউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে আগামীদিনে সেই পথ আরও সুগম হল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রাজ্যের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বইমেলার উদ্যোক্তা তথা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুলসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন এই বৈঠকে। এর আগে, ২০২৩ সালে কলকাতা বইমেলার থিম কান্ট্রি ছিল স্পেন। সেই সময়েই এখানকার উদ্যোক্তাদের সঙ্গে স্পেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলা ও স্প্যানিশ সাহিত্য-সংস্কৃতির বিষয়ে আদানপ্রদান হয়। সেসময়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনাও
হয়েছিল। বইমেলার পাশাপাশি মাদ্রিদে লা লিগার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মউ স্বাক্ষর হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন লা লিগার সভাপতি জাভিয়ের তেভাসও। বৈঠকে লা লিগার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর ঠিক হয়েছে, কলকাতায় খুব শীঘ্রই অ্যাকাডেমি গড়বে লা লিগা। লা লিগার একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় আসবেন। এই অ্যাকাডেমি গড়ার জন্য জমি দেবে রাজ্য সরকার। করা হবে যাবতীয় ব্যবস্থাও। স্পেনের বুকে সেই প্রতিশ্রুতিই দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের সঙ্গে লা লিগার কর্তাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শেষে দুই পক্ষের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়। খুব তাড়াতাড়ি লা লিগার কর্তারা কলকাতায় আসবেন। বাংলায় একটি ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়ে তুলবেন। আমাদের পক্ষ থেকে সবরকমের সাহায্য করা হবে। কোনওরকম সমস্যা হবে না। আমরা চাই বাংলার ফুটবলের উন্নতির জন্য একটি বিশ্বমানের ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়ে উঠুক। অন্যদিকে সৌরভ বলেন, শুধু বাংলা নয় গোটা ভারতের কাছেই এটি এক অসাধারণ এক মুহূর্ত। আশা করছি স্প্যানিশ ফুটবল কলকাতার বুকে আলাদা দৃষ্টান্ত গড়ে তুলতে পারবে। পাশাপাশি বলেন, আপনারা একবার কলকাতায় এলেই বুঝতে পারবেন কেন এই শহরে ফুটবল অ্যাকাডেমি তৈরি হওয়া উচিত।