প্রিয়াংকা সেনগুপ্তঃ মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়েই দিল্লির নরেন্দ্র মোদির সরকারকে বুধ দুপুরে তোপ দাগলেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেট্রোল-ডিজেল থেকে জীবনদায়ী ওষুধ মায় রান্নার গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কার্যত নাজেহাল দেশের জনতা। অথচ মোদি সরকার নীরবে সেই দৃশ্য দেখে চলেছে। এক এক সময় দেখে মনে হচ্ছে দেশে কোনও সরকারই নেই। সেই প্রেক্ষাপতেই এদিন মোদি সরকারকে একহাত নিলেন মমতা। বুধবার মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠে ছিল তৃণমূলের দলীয় কর্মীদের সভা। যদিও তা কার্যত মমতা ম্যাজিকের দরুন জনসভায় পরিণত হয়েছিল। আর ভিড়ে ঠাসা সেই সভা থেকেই মোদি সরকারের তলোধনা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই সরকার মানুষ মারার সরকার। পেট্রল-ডিজেল থেকে রান্নার গ্যাস, ওষুদের দাম সব কিছু বাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের পকেট কেটে লুঠ চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার আইসিডিএসের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলা থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়, কিন্তু প্রকল্পের টাকা দেয় না। রাজ্যের প্রাপ্য ৯২ হাজার কোটি টাকা মোদী সরকার আজও দেয়নি।” মোদি সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে মমতা বলেন, ‘রান্নার গ্যাসের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। ডিজেল আর পেট্রোলের দাম রোজ বেড়ে চলেছে। ৮০০ ওষুধের দাম বেড়েছে। সুগার, কিডনির ওষুধ মারাত্মক দামী হয়েছে। ওষুধ মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস। প্রায় সব মানুষ সুগার, প্রেশারের ওষুধ খান, তার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হল। মানুষের পকেট কেন্দ্র সরকার লুঠ করছে। এই সরকার মানুষ মারার সরকার। মানুষের পকেটে কাটছে। কেউ যদি ২০০ টাকা খায় তাহলে তা দেখা যায়। আর পেট্রোল-ডিজেল থেকে ১৭ লাখ কোটি টাকা মানুষের কাছ খেকে লুঠ করেছে কেন্দ্র। এর জন্য মানুষকে কত খেসারত দিতে হয় একবার ভেবে দেখুন। লক্ষ-কোটি টাকা তুলেছে। কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই! আর প্রতিবাদ করলেই হিন্দু-মুসলমান দেখিয়ে দিচ্ছে। ওটা খুড়ের কল। ১০০ দিনের কাজে পাঁচ মাস টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। জ্বালানির জ্বালায় জর্জরিত জনতা। সংসার চালাতে কালঘাম ছুটছে আমজনতার। পেট্রোল-ডিজেল থেকে ওষুধ সব কিছুর দাম বাড়িয়েছে। মানুষের পকেট কেটে লুঠ চলছে। আর এই সব ঢাকতে হিন্দু-মুসলমান বিভেদের হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গ্যাসের দামের ঢেউ উঠছে ঠিক সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো। একটা করে ঢেউ আসছে আর দাম চড়চড় করে বেড়ে যাচ্ছে। লুট, লুট, লুট হচ্ছে। কেন্দ্র মানুষের পকেট লুট করেই চলেছে।’ মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা লড়াই করতে হবে। মা-বোনেদের এগিয়ে দিতে হবে। যারা মানুষের কাজ না করে নিজের কাজ করছেন, ঘরে বসে যান। মেয়েদের বেশি করে সংগঠনের সামনের সারিতে আনতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস আমার সৃষ্টি, সেই সৃষ্টি বৃথা যেতে পারে না। তৃণমূল ভারতকে পথ দেখাবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে দিল্লিও হাতের মুঠোয় হবে।”