জেলা

চা-বাগান ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী, বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলনে এক লক্ষ কোটির বিনিয়োগ-প্রস্তাব

উত্তরবঙ্গে আয়োজিত বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলনে চা-বাগান ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ চা-বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে ভোট রাজনীতির অভিযোগ তুললেন শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই ৷ প্রয়োজনে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি এবং চা শিল্পপতিদের নিয়ে দিল্লিতে টি-বোর্ডের দফতর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দিলেন মমতা ৷ ঘটনার সূত্রপাত চা-বাগান ও সেখানে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার সময় ৷ সেখানে যেমন নানান প্রস্তাব দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে টি-বোর্ডের বিরুদ্ধে চা-বাগানগুলি বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে ৷ জলপাইগুড়ি স্মল টি-গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী সেই অভিযোগ করেন ৷ তিনি বলেন, “টি-বোর্ড গত বছর ৩০ নভেম্বর নতুন চা-পাতা তোলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ৷ যা পরে রাজ্য সরকার খারিজ করে দেয় ৷ ফের একবার টি-বোর্ড একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ আর সেই নিয়ে চক্রান্ত করছে ৷ আমরা চাই আপনি বিষয়টা দেখুন ৷” যা শুনে সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভোট-রাজনীতির অভিযোগে সরব হন মমতা ৷ মমতা হুঁশিয়ারি দেন, “এসব হবে না ৷ এসব চলতে পারে না ৷ ভোটের রাজনীতি করা হচ্ছে ৷ ভোটের আগে বন্ধ বাগান খুলে দেব, সব করে দেব ৷ পরে সব ভুলে যাবে, এটা হবে না ৷ আপনারা এবার ঘেরাও করে দেবেন ৷ প্রয়োজনে প্রতিনিধি পাঠিয়ে দিল্লিতে টি-বোর্ড ঘেরাও করে রাখা হবে ৷” এ দিন নেপালের চা ভারতে ঢোকা নিয়েও সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তবে, এই বিষয়ে রাজ্য সরকার দ্রুত একটি টি-টেস্টিং ল্যাবরেটরি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি ৷ প্রসঙ্গত, সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে উত্তরবঙ্গের আট জেলার শিল্পপতিদের নিয়ে বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করে রাজ্য সরকার ৷ এ দিনের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, উদয়ন গুহ, মলয় ঘটক, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, সভাধিপতি অরুণ ঘোষ-সহ উত্তরের আট জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ আধিকারিকরা ৷ এ দিন মঞ্চ থেকে মমতা জলপাইগুড়ি জেলার জল্পেশ মন্দিরের স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করেন ৷ এই স্কাইওয়াক তৈরি করতে রাজ্য সরকার পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে বলে জানান তিনি ৷ পাশাপাশি, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের অধীনে চারটি শিল্পতালুকের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তার মধ্যে জলপাইগুড়িতে দু’টি ও আলিপুরদুয়ারে দু’টি শিল্পতালুক রয়েছে ৷ জলপাইগুড়ি জেলার আমবাড়ি-ফালাকাটা ও ডাবগ্রামে এবং আলিপুরদুয়ারের এথেলবাড়ি ও জয়গাঁতে দু’টি শিল্পতালুক তৈরি করা হয়েছে ৷ চারটে শিল্পতালুক মিলিয়ে মোট জমির পরিমাণ প্রায় ১২৪ একর ৷ প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ৷ এই শিল্পতালুকগুলিতে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার ৷ সেই সঙ্গে এ দিনের শিল্প সম্মেলনে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ-প্রস্তাব এসেছে বলে দাবি করেছে প্রশাসন ৷