ভোটের আগে কুস্তি, পরে দোস্তিতেই বিজেপির সমর্থনে ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন সাংমা
মেঘালয়ে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় অমিত শাহ তীব্র আক্রমণ করেছিলেন কনরাড সাংমাকে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে দুর্নীতি পরায়ন বলে ন্যাশানল পিপিলস পার্টি -কে কটাক্ষ করেছিলেন। নরেন্দ্র মোদীও মেঘালয়ে একা বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে এনপিপি-কে আক্রমণ করেছিলেন। কিন্তু ভোট মিটতেই আবার কাছাকাছি এনপিপি, বিজেপি। একটুর জন্য একক সংখ্য়াগরিষ্ঠতা না পাওয়া কনরাড সাংমার এনপিপি-কে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিল বিজেপি। এমন আঁচ অবশ্য ভোটের আগে থেকেই ছিল। অনেকেই বলেছিলেন, বিজেপি শেষ পর্যন্ত মেঘালয়ে তেমন কিছু করতে না পারলে, পুরনো সঙ্গী সাংমাদেরই সমর্থন করবে। তেমনই হল। ৬০ আসনের মেঘালয় বিধানসভায় একটি আসনে প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ভোট হয়নি। ফলে ৫৯টি-তে লড়ে এনপিপি জেতে ২৬টি আসনে, যেখানে সরকার গড়তে চাই ৩০ জন বিধায়কের সমর্থন। বিজেপি সেখানে সব কটি আসনে একা লড়ে জেতে ২টি-তে। বিজেপির পাশাপাশি স্থানীয় আরও দুটি দলের ৩ জন বিধায়কের সমর্থন আদায় করে সরকার গড়ার দাবি জানাতে রাজভবনে গেলেন পিএ সাংমার পুত্র কনরাড সাংমা। যেখানে ইউডিপি, কংগ্রেস, তৃণমূল মিলিতভাবে ২১টি আসন জিততে চলেছে। প্রধান বিরোধী আসনে বসতে চলেছে ইউডিপি (১১টি আসন)। কংগ্রেস ও তৃণমূল ৫টি করে আসনে জেতে। বিজেপি-র থেকে বেশী আসনে জেতে ভয়েস অফ দ্য পিপলস পার্টি (৪টি)। নরেন্দ্র মোদী শিলংয়ে প্রচারের শেষদিনে বিশাল জনসভা করলেও বিজেপি দুটির বেশী আসনে জিততে পারেনি। ২০১৮ বিধানসভার পরেও মেঘালয় কংগ্রেসের থেকে কম আসনে জিতলেও বিজেপির সমর্থনে সরকার গড়েছিলেন এনপিপি-র কনরাড সাংমা। ১৯৮৮-৯০ তিন বছর মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কনরাডের বাবা পিএ সাংমা। লোকসভার অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। পরে সোনায়ি গান্ধী বিদেশী ইস্যুতে ১৯৯৯ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে শরদ পওয়ারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এনসিপি তৈরি করেন পিএ সাংমা। এরপর ২০১২ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চাওয়ায় শরদ পওয়ারের সঙ্গে বিরোধের জেরে এনসিপি ছাডেন পিএ সাংমা। রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে হারের ২০১৩ সালে এনপিপি গঠন করেন সাংমা। পরের বছর এনপিপি-র টিকিটে জিতে সাংসদ হন। ২০১৬ সালে তিনি প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুর পর এনপিপি-র দায়িত্ব নিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মেঘালয়ে সরকার গড়েন কনরাড সাংমা। ক দিন আগে অমিত শাহ যাকে বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদি টাকা দিলেও দুর্নীতি করায় কোনও কাজ করেন না কনরাড। সেই কনরাডই এখন বিজেপির সমর্থনে দ্বিতীয়বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন।
