ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়েই পাকিস্তানে ঘাঁটি করে থাকা জঙ্গিদের যোগ্য জবাব দিল ভারতীয় সেনা। গতকাল, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। স্থল, বায়ু ও নৌসেনার মিলিত অভিযান ছিল এটি। পাকিস্তানের ভিতরে ৪টি এবং পিওকে-তে ৫টি জঙ্গি ঘাঁটিকে নিশানা করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত ৷যাতে এখনও পর্যন্ত ৯০ জনের বেশি জঙ্গির মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। ভারতের এয়ারস্পেস থেকেই হামলা চালানো হয়েছে। পহেলগাঁওতে নৃশংস জঙ্গি হামলার যোগ্য জবাব দিতেই এই অপারেশন বলে কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। কোন কোন জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে? সূত্রের খবর, বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, কোটলি, গুলপুর, সাওয়াই, সরজল, বারনালা, মুজ্জফরাবাদ ও মেহমুনাতে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ভারত। পহেলগাঁও হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন ভারতের

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তিনি এটা বলেছিলেন, শুধুই পহেলগাঁওতে হামলা চালানো জঙ্গিরা নয়, তার পিছনে থাকা মূল চক্রীদেরও ছাড়া হবে না। তাই এই এলাকাগুলিতেই খুঁজে খুঁজে হামলা চালিয়েছে নয়াদিল্লি। কারণ এই এলাকাগুলিতেই ঘাঁটি ছিল লস্কর, জইশ জঙ্গিদের। মূলত ভারতের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কাজ ও জঙ্গিদের ট্রেনিং দেওয়া হতো এই এলাকাগুলি থেকেই। এমনই গোয়েন্দা সূত্রে খবর পায় ভারত। তারপরেই বেছে বেছে কেবলমাত্র জঙ্গি ঘাঁটিতেই হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। হামলা চালানো জায়গাগুলির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেমন-
🔴 বাহাওয়ালপুর: জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠনের মূল কার্যালয় রয়েছে এখানে। পাকিস্তানের দক্ষিণ পাঞ্জাবে অবস্থিত এলাকাটি।
🔴 মুরিদকে: লাহোর থেকে মাত্র ৪০ কিমি উত্তরে অবস্থিত এলাকাটি। এখানেই লস্কর-ই-তইবার বিভিন্ন এনজিও আছে। সঙ্গে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘাঁটি ও ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে।
🔴 কোটলি: পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই স্থানটি ভারত বিরোধী কাজে ব্যবহার করে জঙ্গিরা। এখান থেকেই জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশ করে ও আত্মঘাতী হামলার ট্রেনিং দেওয়া হয় কোটলিতেই।
🔴 গুলপুর: জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি ও পুঞ্চে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল এই এলাকাটি।
🔴 সাওয়াই: উত্তর কাশ্মীরের উপত্যকা বিশেষ করে সোনমার্গ, গুলমার্গ ও পহেলগাঁওতে হামলা চালাতে এই এলাকাগুলি ব্যবহার করত জঙ্গিরা।
🔴 সরজল এবং বারনালা: ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য ব্যবহার করা হতো এই এলাকাগুলি।
🔴 মেহমুনা: পাকিস্তানের সিয়ালকোটের কাছে অবস্থিত এই প্রদেশটিতে হিজবুল মুজাইদিনের বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে ধরা হয়। যদিও এই জঙ্গি সংগঠন এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়।
এছাড়াও মুজ্জফরাবাদে লস্কর ও জইশ জঙ্গিদের ঘাঁটি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, এই এলাকাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জঙ্গিদের আঁতুরঘর। তাই জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে হামলা। দাবি ভারতীয় সেনার। এই হামলার জেরে পাক সেনার কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
