দেশ ভারত-পাক সংঘর্ষ

গতকাল রাতে ভারতের ৩৬টি জায়গায় ৪০০ ড্রোন হামলা চালায় পাকসেনা, প্রত্যাঘাত থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলছে ইসলামাবাদ

আরও একবার পাকিস্তানের মিথ্যা ফাঁস করল ভারত ৷ পাক সেনা ভারতের সেনাঘাঁটির পাশাপাশি ধর্মীয় স্থানগুলিকেও নিশানা করছে ৷ শুধু তাই নয়, এবার তারা সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে ৷ দু’দেশের উত্তেজনার আবহে নিজেদের দেশে অসামরিক বিমান চালু রেখে সাধারণ যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাইছে ইসলামাবাদ ৷ তাছাড়া পরপর দু’রাত হামলা চালিয়েও সে কথা তারা অস্বীকার করেছে ৷ মোট ৩৬টি জায়গায় ৪০০টি ড্রোন ছুড়ে হামলার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে তারা ৷ পাকিস্তান কতটা মিথ্যা বলতে পারে সেটা এই ঘটনা থেকে আরও একবার প্রমাণিত হল ৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে এভাবেই পাকিস্তানকে ফের কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি, ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং ৷ এদিনও মিস্রির সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন ভারতীয় সেনার এই দুই মহিলা আধিকারিক ৷ কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, “বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভারতের পশ্চিম দিকের সীমান্তে সেনা ছাউনি গুলিকে নিশানা করে পাকিস্তান ৷ সেই কারণে একাধিকবার ভারতের আকাশসীমায় অনধিকার প্রবেশ করে পাক-সেনা ৷ এর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারী সমরাস্ত্র নিক্ষেপ করতে থাকে তারা ৷ লেহ থেকে সার্কি পর্যন্ত ৩৬টি জায়গায় ৪০০টি ড্রোন ছুড়ে হামলার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে তারা ৷ কিন্তু ভারতীয় সেনা কাইনেটিক ও নন-কাইনেটিক মাধ্যমে এই ড্রোনগুলির অধিকাংশই নামিয়ে আনে ৷” বারবার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে এই বিপুল সংখ্যক ড্রোন পাঠানোর কারণও উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, “পাকিস্তানের হয়তো ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিল ৷ এছাড়া গোয়েন্দা খবরাখবরও জোগাড় করার উদ্দেশ্যে ছিল তাদের ৷ পাক হামলার পর ড্রোনের যে ধ্বংসস্তূপ পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷ তবে প্রাথমিক অনুমান, পাকিস্তান তুরস্কের আসিসগার্ড সোনগার ড্রোন ব্যবহার করেছে ৷” সাংবাদিক বৈঠকে দুই সেনা আধিকারিক আরও জানান, এই হামলার পর বেশি রাতে ভাতিন্ডা সেনাঘাঁটিতে সশস্ত্র ইউএভি পাঠিয়ে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান ৷ সেই ড্রোনটিও চিহ্নিত করে নিষ্ক্রিয় করা হয় ৷ ভারতও জবাব দিতে ছাড়েনি ৷ এই প্রসঙ্গে কুরেশি ও ব্যোমিকা বলেন, “ভারতও পাকিস্তানের চারটি বায়ু সেনা ঘাঁটিতে সশস্ত্র ড্রোন পাঠায় ৷ এর মধ্যে একটি ড্রোন পাক এয়ার ডিফেন্স রেডার ধ্বংস করতে পেরেছে ৷ নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর জম্মু-কাশ্মীরের উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার, রাজৌরি, আখনুর, উধমপুরে ভারী গুলি বর্ষণ চালাতে থাকে পাকিস্তান ৷ এর সঙ্গে ছিল সশস্ত্র ড্রোন হামলার প্রচেষ্টা ৷ এর ফলে ভারতীয় সেনার কয়েকজন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন ৷ ভারত এর জবাব যথোপযুক্ত জবাব দিয়েছে এবং তাতে পাকিস্তানেরও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে ৷” উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, “আরও একবার পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ সামনে এলো ৷ ৭ মে রাত ৮টা ৩০মিনিট নাগাদ সময় বিনা প্ররোচনায় ভারতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান ৷ তারা জানত ভারতও আকাশপথে এই হামলার জবাব দেবে ৷ তাও অসামরিক বিমান চলাচলের জন্য আকাশপথ বন্ধ করেনি পাকিস্তান ৷ তারা আসলে অসামরিক বিমানযাত্রীদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছিল ৷” ব্যোমিকা আরও বলেন, “এই সংঘাতের পরিস্থিতিতে ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমায় আকাশপথে যে আন্তর্জাতিক বিমানগুলি যাতায়াত করছে, সেগুলি একেবারেই সুরক্ষিত নয় ৷” একটি ছবি তুলে ধরে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেন, “এই সময় পঞ্জাবের আকাশে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক হাই অ্যালার্ট জারি করেছিল ৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভারত আকাশপথ বন্ধ রাখায় সেখানে কোনও বিমান ছিল না ৷ কিন্তু করাচি থেকে লাহোরে বিমান চলাচল করছিল ৷ এয়ারবাস ৩২০, অসামরিক এয়ারক্রাফ্ট দামাম থেকে যাত্রা শুরু করে ৫টা ৫০মিনিটের সময় এবং রাত ৯টা ১০ মিনিটে লাহোরে বিমানটি অবতরণ করে ৷ এই সময় আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমানে থাকা যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ভারতীয় বায়ুসেনা নিজেদের সংযত রেখেছে ৷”