ভুয়ো ভোটার কার্ড ইস্যুতে সংসদে আলোচনা করতেই হবে। কেন্দ্র জবাব না দিলে প্রয়োজনে লোকসভা-রাজ্যসভা অচলের করবে এককাট্টা বিরোধীরা। বুধবার মোদি সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিল তৃণমূল। সেই হুঁশিয়ারিকে সমর্থন করছে সব বিরোধী দলই। এমনকী মোদিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’র সদস্য না হলেও ওড়িশার বিজু জনতা দলও (বিজেডি) এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পার্টির পাশে। এদিন রাজ্যসভায় ভুয়ো ভোটার কার্ড ইস্যুতে সরব হন লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডির সাংসদ মনোজ ঝা। তাঁকে সমর্থন করেন কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, আপ, জেএমএম, আইইউএমএল এবং বিজেডি এমপিরা। সব মিলিয়ে ৫১ জন সাংসদ। ভুয়ো ভোটার কার্ড ইস্যুতে যে বিরোধীরা একজোট, সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা। দিনের দিনই জবাব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। সেই মতো বুধবারই রেলের জবাব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব অনুরোধ করেন, আগামী সোমবার উত্তর দেবেন। তা মেনে নিয়েছে বিরোধীরা। তবে সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হয়েছে শর্ত- ভুয়ো ভোটার কার্ড ইস্যুতে আলোচনা করতে হবে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী রিজিজুকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চাপ বাড়ানো হয়েছে রাজ্যসভায়। পরে একই পথ অনুসরণ করা হবে লোকসভায়। সরকারকে বলা হয়েছে, হয় রাজ্যসভার রুল ২৭৬ (মুলতুবি প্রস্তাব), নয়তো রুল ১৭৬ (শর্ট ডিউরেশন ডিসকাশনে) মেনে এপিক নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এদিন মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি। এবার শর্ট ডিউরেশন ডিসকাশন বা স্বল্প সময়ের বিধিতেই আলোচনা চেয়ে চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। কারণ, রুল ১৭৬ অনুযায়ী আড়াই ঘণ্টা আলোচনা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে জবাবও দিতে হয়। ফলে এক্ষেত্রে ভুয়ো ভোটার কার্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সংসদ চালাতে এদিনই বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। আদায় করেন মূল অর্থ বিল অর্থাৎ বাজেট পাশের ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস। এমনকী শিক্ষা, রেল, স্বাস্থ্য এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা যেন সুষ্ঠুভাবে হয়, সেই আর্জিও জানান। বিরোধীরা অবশ্য সরকারকে ঠারেঠোরে ইঙ্গিত দিয়েছে, চার মন্ত্রকের আলোচনায় কোনও ঝামেলা করবে না। পরিবর্তে ভুয়ো ভোটার কার্ডের বিষয়টি আলোচনা করতে হবে। নাহলে সংসদ অচল করা হতে পারে। রাজ্যসভার রুল ১৭৬ মোতাবেক আলোচনা চেয়ে যে কোনও সাংসদ নোটিস জমা করতে পারেন। তবে সমর্থনে অন্তত দু’জন সাংসদকে সই করতে হয়। তৃণমূলের কাছে যে সংখ্যার অভাব হবে না, তা এদিন বুঝিয়ে দিয়েছে এককাট্টা বিরোধীরা।
