জেলা

বাংলার কৃষকরা ভোলেননি, কী ভাবে দিদি ওঁদের সঙ্গে নির্মমতা দেখিয়েছেন, বিজেপির একটাই মন্ত্র, গরিবের উন্নয়ন, ভূমিপুত্রই হবে এখানকার মুখ্যমন্ত্রীঃ মোদি

প্রথম দফার নির্বাচন আর মাত্র ৩ দিন বাকি আছে। তার আগে আজ কাঁথিতে শেষবেলায় প্রচারে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারী। নরেন্দ্র মোদি বলেন, যুবদের সামনে আগামী ২৫ বছরের পশ্চিমবঙ্গ নির্মাণের দায়িত্ব। তার জন্যই আসল পরিবর্তনের প্রয়োজন। সোনার বাংলা গড়ার কথা এখানকার সবাই শুনছেন। বাংলার প্রতি ঘর থেকে, সবার মুখে একটাই আওয়াজ উঠছে। ২ মে, দিদি যাচ্ছে। দিদি এখনও তাঁদের কাছে জবাব দিতে পারেননি, যাঁদের ঘর বাড়ি শেষ হয়ে গিয়েছিল আমফানে। তারপর তাঁদের জন্য যে অনুদান পাঠানো হয়েছিল, সেটা ভাইপো উইন্ডোতে আটকে গিয়েছিল। আজ বাংলা প্রশ্ন করছে, আমফানের টাকা, চাল কে লুটে নিল? আমফানে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও কেন ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করছেন? জবাব দিন দিদি। যখন প্রয়োজন, তখন দিদি দেখেন না। আর ভোট আসলে উনি বলেন, দুয়ারে সরকার। এটাই আপনার খেলা। বাংলার শিশুরা পর্যন্ত আপনার খেলা বুঝে গিয়েছে। এই জন্যই ২ মে দিদিকে দুয়ার দেখিয়ে দেবে সবাই। মানুষ আপনাকে দরজা দেখিয়ে দেবে। তৃণমূলকে তোপ দেগে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিজেপি কর্মীরা খুন হয়েছেন। তার সাজা তো পাবেনই। কিন্তু তার আগেই রাজ্যের মা-বোনেরা আপনাদের শাস্তি দেবেন। পায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসবেন মহিলারা। হাজার হাজার মানুষ বেরিয়ে এসেছেন। দিদি আপনি শুনতে না পেলে, দেখে নিন। এই ছবিই এর প্রমাণ, বাংলার মহিলারা মনস্থির করে নিয়েছেন। তৃণমূলের খেলা শেষ হবে। উন্নয়ন শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন, এখানকার মানুষের বিকাশ হল বিজেপির একমাত্র সংকল্প। বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব। এটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছি। বাংলা চায় শিক্ষা, শিল্প, কর্মসংস্থান, বাংলা চায় নারী সুরক্ষা, বাংলা চায় কৃষক সুরক্ষা, বাংলা চায় বিজেপি সরকার। মোদি আরও, রাজ্যে সমস্ত প্রকল্পে কাটমানি বন্ধ করবে বিজেপি। উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেবে বিজেপি। মাঝখানে দালাল, ফড়ে কেউ থাকবে না। কোনও তোলাবাজি থাকবে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাড়ি বাড়ি শৌচালয় দিয়েছে, বিদ্যুৎ দিয়েছে, গ্যাস দিয়েছে। করোনার সময় মহিলাদের আর্থিক সাহায্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি দেওয়া হয়েছে। জল দেওয়ার জন্য ‘ঘর ঘর জল’ প্রকল্পের কাজ করছে। কিন্তু এখানকার সরকার সে সব করতেই দিচ্ছে না। তৃণমূল সরকারের আপনাদের জন্য কোনও চিন্তা নেই। মোদি এও বএলন, মেদিনীপুর ভারতের কৃষিতে অনেক বড় স্থান নিয়ে আছে। এখানে চিংড়ির অত্য়াধুনিক চাষ হচ্ছে। কিন্তু দিদি এখানে কৃষকদের ফুড প্রসেসিং, কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। তিনি এও বলেন, বাংলার কৃষকরা ভোলেননি, কী ভাবে দিদি ওঁদের সঙ্গে নির্মমতা দেখিয়েছেন। দিদি আপনাদের কিষাণ সম্মান নিধি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। কৃষকদের কাছে পৌঁছতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। সরকার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দিদি কৃষকদের শত্রু হয়ে বসে রয়েছেন। তাই ২ মে সব বাধার দেওয়াল ভেঙে যাবে। বিজেপি সরকার আসবে। আর কৃষকদের তিন বছরের টাকা তাঁদের দেবই আমি। গত ৩ বছরের যে টাকা দিদি আপনাদের দিতে দেননি, আমি আপনাদের দেবই। যে পশ্চিমবঙ্গ পুরো ভারতকে বন্দে মাতরম শিখিয়েছে, দিদি সেই বাংলায় দাঁড়িয়ে বহিরাগত বলছেন? বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগররা বলেছেন, আমরা সবাই ভারতমাতার সন্তান। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নয়। সবাই ভারতমাতার সন্তান। মোদি এও বলেন, যে বাংলা থেকে গুরুদেব সব ভারতবাসীকে এক মালা পরিয়েছিলেন, এই বাংলা থেকেই যে গুরুদেব পাঞ্জাব সিন্ধু গুজরাত মারাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ বলেছিলেন, আমরা সেটাই বলি সব সময়। সেই বাংলায় আপনি বহিরাগতর কথা বলছেন দিদি? ট্যুরিস্ট বলা হচ্ছে, আমাদের অপমান করা হচ্ছে। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ভূমিতে কাউকে বহিরাগত হিসেবে দেখতেন না। বাংলায় যে বিজেপির সরকার আপনারা বানাতে চলেছেন, তার মুখ্যমন্ত্রী এখানকার ভূমিপুত্রই হবেন।এখানে নন্দীগ্রামের বদনাম করার জন্য় একটার পর একটা মিথ্যে কথা বলে চলেছেন। নন্দীগ্রাম আপনাকে অনেক কিছু দিয়েছে। সেই নন্দীগ্রামের মানুষেরই বদনাম করছেন? পুরো ভারতবর্ষে তাঁদের বদনাম করছেন। নন্দীগ্রামের স্বাভিমানী মানুষ এর জবাব দেবেন।