আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের সিল করা তালা খুলিয়ে নিজের বিভাগের ঘরে প্রবেশ করলেন ওম প্রকাশ মিশ্র । সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তিনি । সেখানে গিয়ে নিজের বিভাগে (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) যান এই অধ্যাপক । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেই পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি । এমনকী নিজের ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাধা পান এই অধ্যাপক । কারণ, সেখানে আগে থেকেই তালা লাগিয়ে রেখেছিলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা । সেই তালায় চাবি ঢোকানোর জায়গা প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে সিল করা ছিল । সেই সিল সরিয়ে তালা খুলিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন ওম প্রকাশ মিশ্র । বর্তমানে তাঁর ঘরের সামনে মোতায়েন রয়েছে কলকাতা পুলিশ । চলতি মাসের প্রথমদিন ওয়েবকুপার সম্মেলন ঘিরে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছিল, তার রেশ সোমবারও বজায় ছিল ৷ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করেন ওম প্রকাশ মিশ্র ৷ নিজের ঘরে যেতে গেলে তিনি পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ৷ তাঁর ঘরেও পড়ুয়ারা তালা ঝুলিয়ে রাখায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ যদিও তালা খুলিয়ে নিজের ঘরে প্রবেশ করেন অধ্যাপক মিশ্র ৷ নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর ঘরের সামনে থাকা সমস্ত পোস্টার খুলে দেওয়ার কথা বলেন । ওম প্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে আজ আমি আসছি ৷ আর সকলের চোখের সামনেই এলাম ৷’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পড়ুয়ারা যদি এভাবে বিক্ষোভ দেখান, তাহলে তিনি কীভাবে ক্লাস করাবেন ? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠছে, তা আসলে পড়ুয়াদের একটা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে করছে ৷ তারা কী থেকে পিঠ বাঁচাতে চাইছে, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ওয়েবকুপার সম্মেলনের দিনের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি ৷ সেদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ ৷ তাঁর দাবি, যাদবপুরের বদনাম করা হচ্ছিল ৷ সেই বদনাম সরিয়ে যাদবপুরের সুনাম ফিরিয়ে আনতে হবে ৷ একই সঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে দেশবিরোধী স্লোগান লেখার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ৷ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে সরব হয়েছেন ৷ একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করার দাবিও তুলেছেন তিনি ৷ উল্লেখ্য, পয়লা মার্চের ঘটনায় অধ্যাপক মিশ্র দু’জন পড়ুয়াকে ঘুষি মেরেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এক ছাত্রের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে । তারপর থেকেই তাঁর গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন পড়ুয়ারা । প্রতিবাদে তাঁর বিভাগে তাঁর ঘরে তালা লাগিয়েছিলেন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা । এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টারও লাগানো হয়েছিল । সেই সব বাধা সরিয়েই এদিন নিজের ঘরে প্রবেশ করেন ওম প্রকাশ মিশ্র ৷ তবে তাতে বিক্ষোভ থামেনি ৷ তাঁর ঘরের বাইরে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘক্ষণ ৷ এসব যখন চলছে, তখন বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সাদা পোশাকে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের দেখা গিয়েছে ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠেছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন প্রবেশ করল ?
