নিট ইস্যুতে উত্তাল লোকসভা। বিরোধীরা এই মর্মে আলোচনার দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকেই সরব হন। হইহট্টগোলের মধ্যে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। পরে অধিবেশন শুরু হলে ফের বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। বাধ্য হয়ে গোটা দিনের জন্যই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এই মর্মে সকাল থেকেই সুর চড়ান লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা চাইছিল দেশের যুবসমাজের উদ্দেশে সরকার এবং বিরোধীদের একটি যুগ্ম বার্তা যাক। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদীর সরকার সেটা চায়নি।’ এমনকী নিট নিয়ে বলতে গেলে রাহুলের মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ কংগ্রেসের। বিরোধীদের দাবি, এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে জ্বলন্ত ইস্যু নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস কেলেঙ্কারি। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ। ফলে অন্য সব অ্যাজেন্ডার আগে নিট ইস্যুতে আলোচনা প্রয়োজন সংসদে। সরকার পক্ষ তা মানতে না চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভ শুরু করে ইন্ডিয়া জোট। এদিন নিট ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষেই মুলতুবি প্রস্তাব আনা হয় বিরোধী সাংসদদের পক্ষ থেকে। প্রথমে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষ নেতারা। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে বৈঠকে যোগ দেন ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার। শুক্রবার সকালেও ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আজ ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা ২৪ লাখ প্রতারিত পড়ুয়ার কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত করবে লোকসভায়। সেইমতো জোটের তরফে একাধিক সাংসদ সংসদের দুই কক্ষেই নিট নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনা হবে।’ কিন্তু, স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়ে দেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে আলোচনার আগে মুলতুবি প্রস্তাব গ্রহণ করা যাবে না। একইসঙ্গে নিট নিয়ে আলোচনার দাবিও খারিজ করে দেন তিনি। স্পিকারের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে আলোচনা চলাকালীনও নিট ইস্যুতে নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারেন বিরোধীরা। তবে বিরোধী শিবির, শুধুমাত্র নিট ইস্যুতে আলোচনার দাবিতে অনড় ছিল। ইন্ডিয়া জোটের তরফে রাহুল গান্ধী স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আর্জি জানান, নিট ইস্যুতে আলোচনার অনুমতি দেওয়া হোক। এটা যুব সমাজের ইস্যু। তাতেও স্পিকার মুলতুবি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। যার জেরে বিক্ষোভ দেখান ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। তারপরই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। NEET-UG 2024 পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে শুক্রবার সকাল থেকেই সংসদে বিরোধীদের সাঁড়াশি চাপের মুখে পড়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে এই নিয়ে বলতে গেলে রাহুল গান্ধীর মাইক মিউট করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। যদিও ওম বিড়লার পালটা দাবি, তাঁর কাছে কোনও স্যুইচ থাকে না। নিট ইস্যুতে হট্টগোল হয় রাজ্যসভাতেও। প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে কংগ্রেস সদস্য সৈয়দ নাসির হুসেন ২৬৭ বিধি অনুযায়ী নিট নিয়ে সাসপেনশন অফ বিজনেস নোটিস আনেন। শুধু কংগ্রেসই নয়, আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংও রাজ্যসভায় নিট বিতর্ক নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত সংসদের দুই অধিবেশনই মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানিয়েছেন, যথাসময়ে নিট নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে।