রবীন্দ্র সরোবর লেক ও সুভাষ সরোবর এলাকায় যাতে কোনওভাবেই ছটপুজো পালিত না-হয়, তার জন্য আগে থেকেই কড়া ব্যবস্থা নিল কলকাতা পুলিশ । পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এ বছরও এই দুই সরোবরে ছটপুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি । দুই সরোবর ঘিরেই রয়েছে বিশেষ নজরদারি, পুলিশি তৎপরতা । রবীন্দ্র সরোবরের বিভিন্ন প্রবেশদ্বার ও সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে ব্যারিকেড বসিয়ে রাখা হয়েছে । পুলিশের পাশাপাশি কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র পক্ষ থেকেও নোটিশ জারি করা হয়েছে । সেই নোটিশে জানানো হয়েছে, 28 অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরের সমস্ত গেট বন্ধ থাকবে । ছটপুজোর সময় যাতে কোনওভাবেই পুণ্যার্থীরা লেকের ভেতরে প্রবেশ করতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী । রবীন্দ্র সরোবর এলাকার সাদার্ন অ্যাভিনিউ রোডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে কোনওভাবেই ছটপুজোর জন্য আগত গাড়ি বা মানুষজন লেকের দিকে এগোতে না-পারেন । কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, “আদালতের নির্দেশ মেনে আমরা কড়া নজরদারি চালাচ্ছি । শহরের অন্য নির্দিষ্ট ঘাটগুলিতে ছটপুজো নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে, তবে সরোবর এলাকায় কোনওভাবেই পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না ।” পরিবেশরক্ষার স্বার্থে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা । এর আগে ছট পুজোকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র সরোবারে বলপূর্বক ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন ছট পুণ্যার্থীরা । একটা সময় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় ছট পুণ্যার্থীদের । এর আগে, রবীন্দ্র সরোবর লেকের ভিতর তাঁদের পুজো-আচ্চা করার পর সেখানে পরিবেশ দূষণ হয় এবং একাধিক জলজ প্রাণী ও পাখির মৃত্যু হয় । সেই ঘটনার রেশ গিয়ে পৌঁছায় আদালতে । এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, “আমরা দিনের পর দিন এর আগে লেক একেবারে নোংরা অবস্থায় দেখেছি । রবীন্দ্র সরোবরের লেকের জলের মধ্যে পুজো-আচ্চা করার পর আমরা দেখেছি সেখানে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ মারা গিয়েছে ৷ এমনকি সেখানে একাধিক মাছও মরে ভেসে উঠেছে । ফলে প্রশাসনের সাধু উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই ।” প্রতি বছরই ছটপুজোর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরের গেট । এবারও তার অন্যথা হয়নি । তবে শুধু গেট বন্ধ করেই ক্ষান্ত থাকবে না প্রশাসন । জানা যাচ্ছে, এর পাশাপাশি ব্যারিকেড আর পুলিশি নিরাপত্তাও রাখা হবে । কারণ, সাম্পতিক অতীতে সরোবরের গেট টপকে প্রবেশ করারও চেষ্টা করেছেন অনেকে । তার ফলে ঝামেলাও হয় । সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে এবার না-ঘটে, তাই আরও নজরদারি বাড়ানো হবে ।


