অভিষেকের ভাবমূর্তি খারাপ করতেই মুকুলকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে, অভিযোগ শুভ্রাংশুর। মুকুল রায় দিল্লিতে ৷ কেন, তা জানেন না মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশু রায় ৷ সেই কারণে তিনি উদ্বিগ্ন ৷ তাঁর অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ভাবমূর্তি খারাপ করতেই মুকুল রায়কে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে ৷ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের দিল্লি যাত্রা নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এমনকি তিনি এখন ঠিক কোথায় সেটাও জানতে পারছে না তাঁর পরিবার। কেননা মুকুলের মোবাইল ফোনও বন্ধ। যদিও জল্পনা ছড়িয়েছে মুকুলের দিল্লি যাত্রার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। সম্ভবত তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে পদ্মশিবিরের লোকেরাই। শুধু তাই নয় এদিনই হয়তো দেখা যাবে মুকুলের বিজেপিতে ফিরতি যোগদানের পালা। সেই সম্ভবনা যে রয়েছে ভালরকমে তা আবার টুইট করে বুঝিয়ে দিয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা যিনি এখন বিজেপিতেই আছেন। আর এই সব কিছু নিয়ে এদিন কাঁচাড়াপাড়ায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়। তাঁর দাবি, মুকুলের এই দিল্লি যাত্রার নেপথ্যে রয়েছে বড় অঙ্কের টাকার খেলা। গতকাল সন্ধ্যায় মুকুল হুট করেই তাঁর দুই ছায়াসঙ্গীকে নিয়ে কলকাতা থেকে দিল্লির পথে পা বাড়ান। দুই শহরের বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়েছে। শুভ্রাংশুর কাছে মুকুলের এই দিল্লি যাত্রার কোনও খবর ছিল না। তিনি খবর পেয়ে দ্রুত কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছে পুলিশের কাছে আবেদন জানান মুকুলকে বিমান থেকে নামিয়ে দিতে। কিন্তু ততক্ষণে বিমান রওয়ানা দিয়েছে দিল্লির পথে। মুকুল দিল্লিতে পৌঁছাবার পর থেকেই আর তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছে না শুভ্রাংশু। মুকুলের মোবাইল ফোন সুইচ অফ রয়েছে। এই অবস্থায় এদিন শুভ্রাংশু সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। জানিয়েছেন, ‘বাবার মানসিক পরিস্থিতি ঠিক নয়। বাবার স্পাইনাল ব্রেইন অপারেশন হয়েছে। পারকিনসন, ডিমেনশিয়া রয়েছে। হাই সুগার, হাই প্রেসারও রয়েছে। সিরোসিস অব লিভার রয়েছে। দিনে ১৮টা ওষুধ খান। ইনসুলিন নেন। বাবার এই দিল্লি যাত্রার পিছনে কোনও বড় টাকার খেলা রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে দুই সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি গেছে বাবা।’ এর পাশাপাশি মুকুলপুত্র জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করার জন্য এই রাজনীতি করা হচ্ছে। বাবাকে বিমানবন্দর থেকে ফেরাতে চেষ্টা করেছিলাম। সিআইএসএফ কোনরকম সাহায্য করেনি। এয়ারপোর্ট থানায় বলেছি। মুকুল রায়ের কাছে এক টাকাও ছিল না কিভাবে টিকিট কাটলেন? বাবা এখন বেতন পান মাত্র একুশ হাজার টাকা। এজেন্সি একজন অবাঙালি ছেলেকে পাঠিয়ে ৫০ হাজার টাকা বাবার হাতে দিয়েছে। অসুস্থ মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। আমাদের পরিবারের পাশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে দাঁড়িয়েছে, তা কোনদিন ভুলতে পারবো না। অসুস্থ মানুষ সেটিং করতে পারে? আমি চাই বাবা রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে থাকুন। পরিবারের সঙ্গে কাটান। পুলিশ সবরকম সহযোগিতা করছে। প্রথম কাজ বাবাকে ফিরিয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা। এয়ারপোর্ট থানা ও বিধাননগরের সিপি চেষ্টা করছেন। কিন্তু দিল্লি পুলিশ কোন সহযোগিতা করছে না।’ উল্লেখ্য গতকাল মাঝ রাতে পুলিশের কাছে শুভ্রাংশু মুকুলের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান।