নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ‘আক্রমণ’ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দিল তৃণমূল। এদিন ডেরেক ওব্রায়েন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যান কমিশনে। সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা বলেন, ‘কমিশনকে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলা হতে পারে এই পূর্বাভাস ছিলই। বিজেপির একাধিক নেতার পোস্টে সেই ইঙ্গিত মিলেছিল। তারপরেও মুখ্যমন্ত্রীকে নিরাপত্তাবিহীন অবস্থায় আক্রমোনের মধ্যে পড়তে হল। এর দায় কার? রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে রাজ্যকে নিয়ন্ত্রণের এই প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি ৷’ গত মঙ্গলবারই বীরেন্দ্রকে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। তার আগে এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদ থেকে সরানো হয়েছিল জ্ঞানবন্ত সিংকে। এদিন পার্থ বলেন, ‘আগে এডিজিকে সরানো হল। তারপর ডিজিকে সরাল কমিশন। রাষ্ট্রের একটা জঘন্য প্রচেষ্টা চলছে। ঠিক তার পরের দিনই মুখ্যমন্ত্রীর উপর আক্রমণ হল।’ পার্থর আরও অভিযোগ, “দায়িত্ববান পুলিশ অফিসারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে ৷ দিনদিন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে ৷ বাংলাকে এত উপেক্ষা কেন ? এর দায়িত্ব কমিশনকে নিতেই হবে ৷ বিজেপি প্রতিনিধিরা যা বলছেন, পরদিন সেই কাজই করছে কমিশন ৷ এর ফলে তাদের দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ জঘন্য এই ঘটনায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে কমিশনকে ৷” শাসকদলের অভিযোগ, দায়িত্ববান পুলিশ অফিসারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এমনই পরিস্থিতি যে, তাঁরা বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রীর। ভোট ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব কমিশনের। কিন্তু বাংলায় রাষ্ট্রবাদের এক নতুন উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব আরও বলেন, ‘বিজেপির প্রতিনিধিরা যা বলছেন কমিশন তেমন তেমন করছে। যা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও দক্ষতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে।’ সাংবাদিকদের ডেরেক বলেন, ‘নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব কমিশনের। জেড ক্যাটাগরি প্রাপ্ত একজনের উপর এধরনের ঘটনা ঘটল। এটা রাষ্ট্রপতি শাসন নয়। কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও নয়। তা সত্ত্বেও কেন এটা হল তা কমিশনকে দেখতে হবে। সেই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় যারা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা নিজেরা আগে গিয়ে হাসপাতালে চিকিত্সকদের সঙ্গে কথা বলে আসুন। নিজেদের চিকিতসা আগে করান। বিজেপির বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে দাবিই করা হয়েছিল ১০ তারিখ বিকাল ৫টার পর যা হওয়ার তা হবে। আর মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে সন্ধ্যা ৬টার সময়ে। এটা পরিষ্কার কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।’ ইতিমধ্যেই গতকালের ঘটনা নিয়ে নন্দীগ্রামে মামলা রুজু হয়েছে। তৃণমূল নেতা তথা মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যদিও বিজেপির তরফে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করা হয়েছে।