ত্রিপুরায় গিয়ে বাধার সম্মুখীন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। পার্টি অফিস ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার আগরতলা বিমানবন্দরে নামে তৃণমূলের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্তের জন্য বুধবার সকালে আগরতলা পৌঁছল তৃণমূলের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ৷ বিমানবন্দরে তাঁদের আটকায় ত্রিপুরা পুলিশ ৷ বিমানবন্দরেই ধর্নায় বসে পড়েন কুণাল ঘোষ, সায়নী ঘোষ, সুদীপ রাহা, প্রতীমা মণ্ডল ও বীরবাহা হাঁসদা ৷সেখান থেকেই তাঁদের ঘটনাস্থলে যেতে হচ্ছে না বলে দাবি করেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বিমানবন্দরেই ধর্নায় বসেন তাঁরা। তৃণমূল প্রতিনিধি দলের অভিযোগ, বিজেপির নির্দেশে তাঁদের গাড়ি আটকানো হয় ৷ স্থানীয় প্রশাসনও সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে । আগরতলা বিমানবন্দরের বাইরে সাংবাদিকদের কুণাল ঘোষ বলেন, “যে গাড়িগুলি আমাদের নিতে এসেছিল, সেগুলিকে ভয় দেখিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে । তিনটি গাড়ি কেড়ে নেওয়া হয়েছে ৷ এখন শুধু একটি গাড়ি আছে । পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে-বাইকে একসঙ্গে একবারে যেতে হবে, দ্বিতীয় ট্রিপ করা যাবে না । অন্য কোনও গাড়ি ভাড়া নেওয়া বা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের অনুমতিও দিচ্ছে না প্রশাসন ৷” তিনি আরও বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সবাই যেহেতু একসঙ্গে যেতে পারব না, আমাদের ব্যাগ গাড়িতে পাঠিয়ে দেব ৷ আমরা হেঁটেই যাব ৷ এটাই বিজেপির গণতন্ত্রের নমুনা । এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনের ‘গভর্ন্যান্স মডেল’ । ত্রিপুরায় আসলে গণতন্ত্র বলে কিছু অবশিষ্ট নেই ।” তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির কয়েকজন কর্মীরা বিমানবন্দরে এসে গাড়িগুলিকে আটকে দেয় ৷ চালককে ভয় দেখানো হয় ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ কুণাল ঘোষ বলেন, “এটাই ত্রিপুরা আর বাংলার পার্থক্য । বাংলায় বিজেপির সাংসদ বা নেতারা এলে তাঁদের প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়া হয়, কোথাও বাধা দেওয়া হয় না । কিন্তু, ত্রিপুরায় আমরা যখন শুধু আমাদের কার্যালয় দেখতে এলাম, তখন প্রশাসন আমাদের চলাচল পর্যন্ত বন্ধ করে দিচ্ছে । এটা কিসের গণতন্ত্র ?” তৃণমূলের যুবনেতা সুদীপ রাহা বলেন, “ত্রিপুরায় বিজেপি-শাসিত প্রশাসন চাইছে আমরা যেন ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারি । তারা চায় না, সারা দেশের মানুষ জানতে পারে ত্রিপুরায় তৃণমূল কার্যালয়ে কীভাবে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে । আজ আমরা বিমানবন্দরে বসে ধর্না দিতে বাধ্য হয়েছি ৷ কারণ, পুলিশ আমাদের গাড়ি কেড়ে নিয়েছে ৷ রাস্তায় যেতে দিচ্ছে না ।” এদিন বিমানবন্দরে বসে শ্লোগান তোলেন তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ বলে, “গণতন্ত্র বাঁচাও, বিজেপি হঠাও ।” তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবারের ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি ৷ উল্টে প্রশাসন বিরোধী দলের উপরই চাপ তৈরি করছে । কুণাল বলেন, “আমরা বিজেপির মতো হিংসায় বিশ্বাস করি না । কিন্তু ত্রিপুরায় রাজ্য সরকার যেভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করছে, তা একেবারে ‘স্টেট-স্পনসর্ড টেরর’ ৷ বিজেপি সরকার ভয় পেয়েছে, তাই এই অবরোধ ও দমননীতি ।” সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “ত্রিপুরায় আজ গণতন্ত্র শ্বাসরুদ্ধ । ভোটের সময় যারা ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’-এর কথা বলেছিল, আজ সেই ইঞ্জিনই গণতন্ত্রকে পিষে মারছে ।”


