দেশ

অপর্ণা-সৌমিত্রদের বিরুদ্ধে এফআইআর, পাল্টা চিঠি বুদ্ধিজীবীদের

মুম্বই: দেশে ক্রমাগত হিন্দুত্বের ঝড়, জয় শ্রীরাম ধ্বনি এবং মব লিঞ্চিংয়ের হার বেড়ে চলায় গর্জে উঠেছিল দেশের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। আর বিহারে ঘটে যাওয়া গণপিটুনির প্রতিবাদে সারা দেশ থেকে ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের মানুষ চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।যাদের মধ্যে ছিলেন অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অনুরাগ কাশ্যপের মত ব্যাক্তিত্বরা। যে কারণে এই সকল বুদ্ধিজীবী মানুষদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল অভিযোগ। দেশদ্রোহিতা, দেশবাসীকে প্ররোচিত করতে বিশেষ ধর্মীয় অনুভূতির ব্যবহার সহ একাধিক বিষয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল চলচ্চিত্র নির্মাতা মণি রত্নম, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনেগাল, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং কণ্ঠশিল্পী শুভা মুদগাল সহ ৪৯ ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগও আনে প্রশাসন।তবে এই সকল বুদ্ধিজীবী মানুষদের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হল আরও একটি চিঠি। আর এতে স্বাক্ষর করেছেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ, ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপারের মত ব্যাক্তিরা।এই নতুন চিঠিতে সকল স্বাক্ষরকারীরা জানতে চেয়েছেন তাদের ৪৯ জন সহকর্মীরা দেশে হয়ে চলা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। একজন দায়িত্বশীল নাগরিকদের কাজটা তাঁরা করেছেন। দেশে হয়ে চলা মব লিঞ্চিং এর ঘটনায় তাঁরা যথেষ্ট চিন্তিত আর সেই কারণে তাঁরা চিঠি পাঠিয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। তবে কেন এই দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হল। এর ফলে গর্জে ওঠা আওয়াজকে কোনভাবে বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে না তো?অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ জানান, “স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সকলে পদক্ষেপের নিন্দা করছি। আমরা মনে করি, এঁরা যা বলেছেন একদম ঠিকই বলেছেন। যেকোনও সমাজসচেতনমনস্কই মানুষ ক্রমাগত ঘটে চলা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতেই পারেন। এটা তাদের নৈতিক কর্তব্য। আরও বিশিষ্টজনেরা আগ্রহ দেখিয়েছেন চিঠিতে সই করার জন্য। প্রশাসন পিছু না হটলে বিচার চেয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।”এই নতুন চিঠিতে অশোক বাজপেয়ী, জেরি পিন্টো, শিক্ষাবিদ ইরা ভাস্কর, কবি জিত থায়েল, লেখক সামসুল ইসলাম, সাধারণ মানুষের গলার আওয়াজকে জোর করে বন্ধ করার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। তাদের দেওয়া এই নতুন চিঠির মূল বক্তব্য হল আমরা সকলে ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের সদস্য এবং দায়িত্বশীল নাগরিক। আর তাই আমাদের সহকর্মীদের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠির প্রতিটা শব্দকে সমর্থন করি। যে কারণে আমরা আবার ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছি। সাধারণ মানুষকে হেনস্থার প্রতিবাদে, মব লিঞ্চিং এর বিরোধিতা নিয়ে প্রতিদিন আমরা কথা বলি। আমাদের সহকর্মীরা এই অন্যায় কাজের বিরোধিতা করেছেন। আইন ব্যবহার করে গর্জে ওঠা আওয়াজ বন্ধ করার প্রতিবাদস্বরূপ দেওয়া হল এই চিঠি। যদিও বিহার প্রশাসনের মতে, বিষয়টি ততটাও উদ্বেগজনক নয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।