দেশ

উন্নাও গণধর্ষণ: দিল্লির হাসপাতালে মৃত্যু নির্যাতিতার

নয়াদিল্লিঃ শেষ হল লড়াই। মৃত্যু হল উন্নাওয়ের নির্যাতিতার। শুক্রবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ দিল্লির সফদরজঙ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। রাত ১১টা ১০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই নির্যাতিতা তরুণী। তাঁকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ১১টা ৪০মিনিট নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। লখনউয়ের কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমে ভর্তি ছিলেন দগ্ধ তরুণী। অবস্থা ক্রমে খারাপ হওয়ায় সফদরজং হাসপাতালে তাঁকে আনার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানেই ডাক্তার শালাব কুমারের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। নির্দিষ্ট একটি আইসিইউ তৈরি করা হয়েছিল তাঁর জন্য। সফদরজং হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান শালাব কুমার জানিয়েছেন, তরুণীর ক্ষত দ্রুত বাড়ছিল। শুরু থেকেই তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। শুক্রবার রাত ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। নির্যাতিতা তরুণীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে গত মার্চে পাঁচ জন মিলে ধর্ষণ করে বছর তেইশের ওই তরুণীকে। ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। বাকি দু’জন এখনও ফেরার। গত সপ্তাহে জামিনে ছাড়া পায় অভিযুক্তরা। বৃহস্পতিবার এই ধর্ষণের মামলায় শুনানির জন্য তরুণী যখন আদালতে যাচ্ছিলেন, তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় পাঁচ অভিযুক্ত। তরুণী সেই সময় ছিলেন রেল গেটের কাছে। তাঁকে টেনে হিঁচড়ে পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানেই তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় অভিযুক্ত পাঁচজনের তিনজন ধর্ষণে অভিযুক্ত। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেই তারা তরুণীর খোঁজে গ্রামের আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এদিনও আদালতে যাওয়ার নির্যাতিতার পিছু নেয় তারা। রেল গেটের কাছে নির্জন জায়গা দেখে সেখানেই তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। সেদিন গায়ে আগুন লাগা অবস্থাতেই এক কিলোমিটার ছুটেছিলেন ওই তরুণী। তারপর এক পথচারীর মোবাইল নিয়ে ফোন করেন পুলিশে। ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। রবীন্দ্র প্রকাশ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশকে। তাঁর কাছেই প্রথম সাহায্য চান উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। রবীন্দ্রর ফোন থেকেই ১১২ ডায়াল করে পুলিশকে খবর দেয় তরুণী। ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে প্রথমে লখনউয়ের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তরুণী। ওই অবস্থাতেই তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে পাঁচ অভিযুক্তের নাম বলেন তিনি। নারকীয় এই ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। ফাইল চিত্র।