দিল্লিতে এবারও জমানত বাজেয়াপ্ত কংগ্রেসের। হারের দায় নিয়ে দলীয় সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সুভাষ চোপড়া । বলেন, আমার কাছে কম সময় ছিল। কিন্তু, সবরকম চেষ্টা করেছি। দিল্লিতে এরকম রাজনীতি আগে কখনো দেখিনি যেখানে ভোটাররা আপ-এর বিজ্ঞপ্তিতে প্রভাবিত হয়েছেন। শিলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে একসময় ১৫ বছর দিল্লিতে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস । কিন্তু ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি দল । এবারও একই ছবি । রাজধানীতে খাতায় খুলল না শতাব্দী প্রাচীন দলের । এককথায়, দিল্লিতে কার্যত ক্ষয়িষ্ণু দলে পরিণত হয়েছে কংগ্রেস । আপ ঝড়ের সামনে টিকতেই পারেনি তারা । এবার ৫ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে । এই হারের পিছনে অভ্যন্তরীণ বিবাদকে দায়ি করছেন কোনও কোনও কংগ্রেস নেতা । কেউ আবার প্রচারের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলছেন । যদিও আশা ছাড়েননি সুভাষ চোপড়া । ফল প্রকাশের পর জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের লড়াই অব্যাহত থাকবে । কিন্তু, শেষমেশ তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন। এইবার ভোটে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে জোট করে 66টি আসনে লড়েছিল কংগ্রেস । বেশিরভাগ কংগ্রেস প্রার্থীই তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্রে পাঁচ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন । জমানত বাজেয়াপ্ত হয় ৬৩জন প্রার্থীর। দিল্লি মহিলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি প্রিয়াঙ্কা সিং মাত্র ৩.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন । হেরেছেন দলের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান পুনম আজ়াদও। ২.২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন তিনি । বদলির কংগ্রেস প্রার্থী দেবেন্দ্র যাদব ১৯.৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন । গান্ধিনগর কেন্দ্রে অরবিন্দর সিং লাভলি পেয়েছেন ১৯.১৪ শতাংশ ভোট । কস্তুরবা নগরের প্রার্থী অভিষেক দত্ত ২১.২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন । জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যাবে বলে ভেবেছিল দল। তাও হয়নি। ত্রুটি হিসেবে দলীয় নেতারা প্রচারের গাফিলতিকেই দায়ি করছেন । ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের হার ছিল ৮.২ শতাংশ । ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের হার ছিল ২২.৪৬ শতাংশ । সেক্ষেত্রে আম আদমি পার্টি ছিল তৃতীয় স্থানে । এই ফলের ভিত্তিতেই কংগ্রেস আশাবাদী ছিল বিধানসভা নির্বাচনে তারা ভালো ফল করবে । কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, এবার ভোটের হার ৫ শতাংশেরও কম । একটি আসনও জিততে পারেনি তারা । দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ দীক্ষিত জানিয়েছেন, এই ফল দেখে তিনি আশ্চর্য নন । অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দলকে ভালো কাজ করা থেকে বিরত রাখছে । দিল্লি মহিলা কংগ্রেসের প্রধান এবং দলের মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় একটি টুইটে লেখেন, “আমরা দিল্লিতে ক্ষয়িষ্ণু । অভ্যম্তরীণ বিশ্লেষণ শেষ । এবার কাজের সময় এসেছে । সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ থেকে শুরু করে সব স্তরের মানুষের সঙ্গে সমানভাবে যোগাযোগ রাখতে হবে । এই সিস্টেমের অংশ হয়ে আমি আমার দায়ভার স্বীকার করছি । ” কয়েকজন দলনেতা দলীয় প্রচারের দিকেও আঙুল তোলেন । নির্বাচনের কয়েকদিন আগে মাত্র রাহুল গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢড়া দুদিনের জন্য প্রচারে এসেছেন ।