হাওড়া: এনআরসি রুখতে সর্বশক্তি দিয়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এমনকি বাংলায় এনআরসি’র ডিটেনশন ক্যাম্প করা হলে সেই ক্যাম্প ভেঙে ফেলারও হুমকি দেন তিনি।রবিবার বিকেলে হাওড়ায় সিপিআইএম হাওড়া জেলা কমিটির ডাকে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘জাতীয় নাগরিকপঞ্জী তৈরির নামে অসমে ২০ লক্ষ মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এনআরসির নামে কেন্দ্রের সরকার ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনছে সারা দেশে। শুধু তাই নয় নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরের মানুষের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। মিথ্যে প্রচার করে সত্যকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশকে দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে। আসলে ওদের পায়ের তলার মাটি এখন টলমল করছে। সব মানুষকে এভাবে চিরকাল বোকা বানিয়ে রাখা যাবে না।’’এদিন সূর্যবাবু তাঁর বক্তব্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘এরা প্রতিদিন মিথ্যা কথা বলে। সেই মিথ্যেগুলো প্রচার করার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ খরচ করছেন। আজকে সারা দেশে কৃষক, শ্রমিক, গরিব, মধ্যবিত্তের কী হাল। রেল, ব্যাংক, বিমা সব বেসরকারি সংস্থার হাতে বিক্রির চক্রান্ত চলছে। নয়তো এগুলো দেশের বড়ো বড়ো পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাবে। বিএসএনএল বিক্রির চক্রান্ত চলছে। দিল্লির সরকার সব বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে। গত ৪৫ বছরে এখন দেশে সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব। নোটবন্দি, জিএসটি করে এক কোটি লোকের কাজ চলে গিয়েছে।’তিনি আরও জানান, বিজেপির এমনই হাল যে আজকে বাঙালির নোবেল জয়েও এরা খুশি হতে পারছে না। সারা দেশে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলে দেশের অর্থনীতিতেও সঙ্কট আসবে। সূর্যবাবু এদিন বলেন, ‘‘মোদীর সঙ্গে দিদির সেটিং হয়েছে। উনি দিল্লি গেলেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন। অথচ এনআরসি নিয়ে কিছু কথা হল না। আমরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। কেন আমাদের প্রমাণ দিতে হবে আমরা দেশের নাগরিক। ১০০ বছর ধরে কমিউনিস্ট পার্টি রয়েছে। আমাদের কবরে পুঁতে দেওয়া হলেও লাল ঝান্ডা থাকবে। আগামী দিনে আমাদের সব বাড়িতে সব মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে আমাদের বার্তা নিয়ে।’’ এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, বিপ্লব মজুমদার প্রমুখ।