কলকাতা

রাজ্য সরকারকে পরিদর্শনের তালিকা পাঠাল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

কেন্দ্রের-রাজ্যের চাপানউতোরের কাটিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও বুধবার সারাদিন ঘরবন্দিই থাকলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তা নিয়ে নানা মহলে শুরু হয়েছিল জল্পনা। তার অবসান ঘটল এ দিন সন্ধ্যায়, যখন রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে নির্দিষ্ট করে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, কোথায় কোথায় যেতে চান তাঁরা। একই সঙ্গে তার জন্য কী কী নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্য সরকারকে তাও জানিয়ে দেয়।পুরো বিষয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত, এমন স্থানীয় প্রতিনিধিদের রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পরিদর্শনে যাওয়ার আগেই পিপিই, মাস্ক-সহ যাবতীয় সুরক্ষা ও প্রতিরোধী সামগ্রীর ব্যবস্থাও করে রাখতে হবে রাজ্য সরকারকে। এ ছাড়া প্রতিনিধিদের যাতায়াত-সহ সমস্ত রকম ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’-এর ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে। কোন জেলার কোথায় কোথায় পরিস্থিতি দেখতে যাবে কেন্দ্রীয় দল – কলকাতা- কলকাতা কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলগাছিয়া বস্তি, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বৌবাজার, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাংরা-ধাপা এলাকা,৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় বাজার এবং গার্ডেনরিচ থানার অন্তর্গত ১৩৪ ও ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় দল। একই সঙ্গে বেলেঘাটা আইডি ও এমআর বাঙুর হাসপাতালে যেতে চেয়েছে তারা। হাসপাতাল ছাড়াও বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখবে ওই দলটি। সেগুলি হল, হাতিবাগান, বেলেঘাটা বাজার, গার্ডেনরিচের ধানক্ষেতি মার্কেট এবং তিলজলার কোহিনুর মার্কেট। বলা হয়েছে যে সময়ে বাজার খোলা থাকবে সেই সময়েই পরিদর্শন করতে চায় কেন্দ্রীয় দল। হাওড়া- পশ্চিমবঙ্গের যে চারটি জেলাকে রেড জোনে রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক তার মধ্যে হাওড়া অন্যতম। এই জেলার হটস্পট এলাকাগুলো ছাড়া সালকিয়া ও পিলখানার পিএম বস্তি এবং চৌরা বস্তি পরিদর্শন করতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন অপূর্ব চন্দ্র। এছাড়াও সত্যবালা আইডি ও গোলাবাড়ির আইএলএস হাসপাতাল ও ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করতে চায় কেন্দ্রীয় দল। হাওড়ার দু’টি বাজার পরিদর্শন করতে চেয়েছে আন্তঃমন্ত্রক দল। সেগুলি হল- ধূলাগড় পাইকারি বাজার এবং উলুবেড়িয়া বাজার। প্রসঙ্গত এই দুটি বাজারই প্রশাসনিক এলাকাগতভাবে গ্রামীণ হাওড়ার অন্তর্গত। উত্তর ২৪ পরগনা- উত্তর দমদম ও দক্ষিণ দমদম- এই দুটি পৌর এলাকার চারটি ওয়ার্ডে পরিদর্শনে যাবে কেন্দ্রীয় দল। উত্তর দমদম পুরসভার বিরাটি এলাকার ১৯ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। সেইসঙ্গে দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্তর্গত ভিআইপি রোড লাগোয়া দক্ষিণদাঁড়ির ২৩ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে যাবে কেন্দ্রীয় টিম। সল্টলেক আমরি হাসপাতাল, বারাসতের জিএনআরসি নার্সিংহোমের পাশাপাশি রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতাল ও হজ হাউসের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার দেখতে যাবে অপূর্ব চন্দ্রের নেতৃত্বাধীন দল। প্রসঙ্গত, হজ হাউসেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তবলিঘি জামাত ফেরত সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে ১০০-র বেশি বিদেশিও রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর- এই জেলার এগরা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী গ্রাম পঞ্চায়েত এবং হলদিয়া শহর এলাকা দেখতে যাবে কেন্দ্রীয় দল। সেইসঙ্গে পাঁশকুড়ার বড় মা হাসপাতাল, তমলুক জেলা হাসপাতাল, হলদিয়া এসডি হাসপাতালের পাশাপাশি হলদিয়া লজিস্টিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারও পরিদর্শনে যাবে দিল্লির দলটি।

একনজরে দেখে নিন রাজ্যের কোথায় কোথায় পরিস্থিতি দেখতে যাবে কেন্দ্রীয় দল

🔴 কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলগাছিয়া বস্তি, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বউবাজার, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাংরা-ধাপা এলাকা।
🔴 এম আর বাঙুর হাসপাতাল ও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল
🔴 হাতিবাগান বাজার, বেলেঘাটা বাজার, গার্ডেনরিচে ধানখেতি বাজার ও তিলজলার কোহিনুর মার্কেট।
🔴 হাওড়ার সালকিয়া, পিলখানা (পিএম বস্তি ও চৌরা বস্তি), সত্যবালা আইডি হাসপাতাল, আইএলএস হাসপাতাল, ডুমুরজলা স্টেডিয়াম, ধুলাগড় পাইকারি বাজার, উলুবেড়িয়া বাজার।
🔴 উত্তর ২৪ পরগনার উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড (বিরাটি এলাকা), দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৩ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড (দক্ষিণদাঁড়ি এলাকা), সল্টলেকের এএমআরআই হাসপাতাল, বারাসতের জিএনআরসি নার্সিং হোম, নিউটাউনের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার রিসার্চ হাসপাতাল ও হজ হাউসের কোয়রান্টিন সেন্টার।
🔴 পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা মিউনিসিপ্যাল মার্কেট, শহিদ মাতঙ্গিনী গ্রাম পঞ্চায়েত, হলদিয়া শহর, পাঁশকুড়ার বড়মা কোভিড হাসপাতাল, তমলুক জেলা হাসপাতাল ও হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল এবং হলদিয়া বন্দর।