দেশ

আগরতলায় বাজিমাত বিজেপির, সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় তৃণমূল

 ত্রিপুরায় পুরভোটের গণনা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৩টি পুরসভা এবং ৬টি নগর পঞ্চায়েতের নির্বাচনের গণনা। ষোলটি কাউন্টিং সেন্টারে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। গণনাকক্ষ থেকে গণনাকেন্দ্র, মোতায়েন BSF এবং CRPF। কাউন্টিং হলের বাইরেও নিরাপত্তায় মোতায়েন রাজ্য পুলিস এবং ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস। কোভিড বিধি মেনে গণনায় জোর। সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু। মোট ৩৩৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১২টিতে ইতিমধ্যে জিতে গিয়েছে বিজেপি। আগেই মোহনপুর, উদয়পুর, রানিরবাজার, শান্তিরবাজার, বিশালগড় পুরসভা এবং কমলপুর ও জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছে শাসকদল।  বৃহস্পতিবারের পুরভোটে হামলা, মারধর, ভোটদানে বাধা দেওয়ার বিস্তর অভিযোগ করেন বিরোধীরা। তৃণমূল ও বামেদের অভিযোগ তাঁদের প্রার্থীদের নিগ্রহ করা হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের তির বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও সব অভিযোগ খারিজ করেছে ত্রিপুরার শাসকদল। ফলাফল ঘোষণার পর যাতে কোনও হিংসা না হয়, সেজন্য কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে আগাম বার্তা দিয়েছে বিপ্লব দেব সরকার। শেষপর্যন্ত বিজেপির ঝুলিতে এল ৩২৯ ওয়ার্ড। অন্যদিকে বিরোধীরা দখল করল মাত্র ৫টি আসন। উদয়পুর, শান্তিরবাজার, মোহনপুর, রানিরবাজার, কামালপুর, বিশালগড়ে ১০০ শতাংশ আসনেই জয়ী বিজেপি।  আগরতলার ক্লিন সুইপ বিজেপির। ৫১টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে সব কটিতে জিতল গেরুয়া শিবির। চমকপ্রদ ফলাফল তৃণমূল কংগ্রেসের। বামেদের পিছনে ফেলে ২৬টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে অর্থাৎ প্রধান বিরোধী হয়ে ঘাসফুল শিবির। ৫০ ও ৫১ নম্বর ওয়ার্ড বাদ দিয়ে বিজেপি পেয়েছে ৫৬.৮৮ শতাংশ, তৃণমূল ২০.৬৬ শতাংশ, সিপিএম ১৮.৪৭ শতাংশ এবং কংগ্রেস ১.৭৭ শতাংশ ভোট।

রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ফলপ্রকাশের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিপ্লব দেব বলেন, যেভাবে ত্রিপুরাবাসীকে বিভিন্নভাবে অপমান করা হচ্ছিল, কুত্সা, পদদলিত করা হচ্ছিল তাতে পুরভোটে তারই জবাব দিয়েছে ত্রিপুরাবাসী। সঠিক জবাব দেওয়ার জন্য ত্রিপুরার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। মানুষ বিজেপিকে প্রায় ৯০ শতাংশ সিট উপহার দিয়েছে। তাঁরাই ঠিক করে দিয়েছেন ত্রিপুরাবাসী কোন দিকে যেতে চায়। এখানে  কেউ সংখ্যালঘু নয়, কেউ এখানে সংখ্যাগুরু নয়। সবাই ত্রিপুরাবাসী। একসঙ্গে ত্রিপুরার উন্নয়ন চায়। একসঙ্গে থাকতে চায়। এই জয় ত্রিপুরার ৩৭ লাখ মানুষের জয়। ত্রিপুরার স্বাভিমানের জয়। ঘাসফুল শিবিরের উদ্দেশ্য বিপ্লব দেব বলেন, ‘বাংলার ঐতিহ্য যাতে নষ্ট না হয় তা দেখুন সেখানকার শাসক দল। সেই বার্তাই ত্রিপুরাবাসী তাদের দিয়েছে।’ ত্রিপুরার ফল নিয়ে অবশ্য আশাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুরভোটে ২৪ শতাংশের কাছাকাছি ভোটে পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মাত্র ৩ মাসের মধ্যে রাস্তায় নেমে তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরার মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। মানুষও এতকিছু উপেক্ষা করে যতটুকু ভোট দিতে পেরেছে তাতেই তৃণমূল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। মনে হয় ভারতে এমন নজির নেই যে মাত্র তিন মাস লড়াই করে ২৪ শতাংশ ভোট শেয়ার দখল করতে কেউ পেরেছে!