৫দিন ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষে ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ভারতীয় ৷ যাঁদের সিংহভাগই পড়ুয়া ৷ ভারত সরকার তাঁদের ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিলেও, ক্রমশ জটিল হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া ৷ এরই মাঝে অভিযোগ উঠেছে, রোমানিয়া ও পোল্যান্ড সীমান্তে সেনার হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছে ভারতীয় পড়ুয়াদের ৷ এমনকি ছাত্রীদের হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে ৷ ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় রোমানিয়া, হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে উদ্ধারের কথা আগেই জানিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক ৷ হাঙ্গেরি ও রোমানিয়া হয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় হাজার পড়ুয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে ৷ তবে পোল্যান্ড সীমান্তে কাতারে কাতারে ইউক্রেনবাসী দেশ ছাড়ার জন্য ভিড় জমানোয় সেখান থেকে উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে ৷ সীমান্তে পৌঁছেও আটকে থাকতে হচ্ছে অনেককে ৷ তবে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে রবিবার যে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল, সেখানেও ফের এই তিন দেশের সীমান্ত ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল পড়ুয়াদের ৷ রবিবার গভীর রাতে আরও একটি নয়া নির্দেশিকা জারি হয় পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের তরফে ৷ সেখানে বলা হয়, ইউক্রেনের সেহেনি থেকে পোল্যান্ড সীমান্তে আসতে ১০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ কিন্তু অভিযোগ, পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছে ইউক্রেনের সেনার নিগ্রহের শিকার হয়েছেন বেশ কিছু ভারতীয় পড়ুয়া ৷ পড়ুয়াদের কথায়, ইউক্রেনের ভিতরে থাকলে রুশ সেনার আক্রমণের ভয় রয়েছে, কষ্ট করে সীমান্তে পৌঁছে সেখানে আবার ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে ৷ একাধিক ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, ইউক্রেনের সেনা আগে নিজেদের দেশের লোকেদের সীমান্ত পেরতে দিচ্ছে ৷ ফলে ভারতীয় পড়ুয়ারে সেখানে গিয়ে আটকে রয়েছেন ৷ রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধেও হেনস্থার অভিযোগ উঠছে ৷ ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খারকিভে আটকে পড়া এক পড়ুয়া বলেছেন, “আমরা ভিডিয়োতে দেখছি, খবর পাচ্ছি কিয়েভ থেকে যাঁরা পশ্চিম দিকে পোল্যান্ড, রোমানিয়া সীমান্তে গিয়েছেন তাঁদের অত্যাচার করছে রুশ সেনা ৷ ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না অনেক সময় ৷ ” এনডিটিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মানসী চৌধুরী নামক ইউক্রেনে আটকে থাকা এক পড়ুয়া বলেন, “প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এরা আমাদের উপর অত্যাচার করছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ইউক্রেনের সেনারা আমাদের সীমান্ত পার করে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রত্যেকটি মহিলা পড়ুয়াকে হেনস্থা করা হচ্ছে, আমাদের চুল ধরে টানা হচ্ছে, রড দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। বেশকিছু মহিলার গুরুতর আঘাত, এমনকি হাত বা পা ভেঙেও গিয়েছে।”