ফের ছাত্রবিক্ষোভে উত্তাল বিশ্বভারতী। টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ অন্য আধিকারিকরা। মঙ্গলবার ভোরে ঘেরাও অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন রেজিস্ট্রার। ঘরের বাইরে বসে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশ কাটিয়ে শুয়ে পড়ে বেরনোর অভিনব পন্থা নেন তিনি। কিন্তু তাতেও পড়ুয়ারা বাধা দেওয়ায় তিনি ঘরবন্দিই থাকেন। পড়ুয়াদের কাছে তিনি বলেন শিবের মাথায় জল ঢালতে যাবেন কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ রয়েছে পঠন-পাঠনও। হস্টেল খোলাসহ একাধিক দাবিতে সোমবার দুপুর থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। রাতভর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অফিসে ঘেরাও করে রাখা হয় রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল ও ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিককে। সকালে বিশ্বভারতীর উপাচার্য সকল কর্মীদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন। কিন্তু সেখানেও গোল বাধে। অধ্যাপক ও কর্মীরা সেন্ট্রাল অফিসের সামনে চলে এলেও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর দেখা মেলেনি। দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থেকে অসন্তোষ দেখা দেয় কর্মীদের মধ্যেও। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, করোনাবিধি বেশ কিছুটা শিথিল হয়েছে। স্কুল-কলেজ খুলে গিয়েছে। অথচ বন্ধ রয়েছে বিশ্বভারতীর ছাত্রাবাস। তাই হস্টেল খোলাসহ একাধিক দাবিতে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। শুরু হয় ছাত্রদের মিছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্লাস। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন দফতরে। অশান্তির আঁচ পেয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বেরিয়ে গেলেও আটকে পড়েন বহু কর্মী। পড়ুয়াদের মূলত তিনটি দাবি। প্রথমটি, অবিলম্বে হস্টেল খুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। তৃতীয়ত, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি বদল করতে হবে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সোমবার সকাল পর্যন্ত আটকে রাখা হলেও, রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য। তাঁর উপস্থিতি ছাড়া কোনও ভাবেই মন্তব্য করা সম্ভব নয়। মঙ্গলবার সকালেও বন্ধ ছিল পঠন-পাঠন। বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক কাজকর্মও। বিশ্বভারতী উপাচার্য দফতরের সামনে জমায়েত করে রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ফলে, কর্মী আধিকারিকরা অফিসে ঢুকতে পারছেন না।।