“বন্ধুরা, তোমরা অন্যের লেখা নকল কর না ৷ যা করছ, তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করে যাও”, পরীক্ষা পে চর্চায় তাঁর কিশোর-কিশোরী বন্ধুদের এ ভাবেই সাহস জোগালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি উৎসবের মেজাজে পরীক্ষা দেওয়ার বার্তা দেন ৷ করোনা অতিমারিতে দীর্ঘ সময়ে পড়ুয়ারা অনলাইনে পড়াশোনা করে এসেছে ৷ স্কুলে ক্লাসঘর, বোর্ড, শিক্ষকের কথা কানে শোনা, এসব কিছু হঠাৎই উধাও হয়ে গিয়েছিল ৷ বদলে বাড়িতে থেকে মোবাইলের স্ক্রিনে শিক্ষক দেখা, তাঁর কথা শোনায় অভ্যস্ত হতে হয়েছে তাদের ৷ এবার ফের অফলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে ৷ এই অনলাইন-অফলাইন-অনলাইন পড়াশোনার মাধ্যমে আসা-যাওয়া নিয়ে তারা কী করবে বুঝতে পারছে না ৷ সমাধান করে দিলেন প্রধামন্ত্রী ৷ তিনি বললেন, “সমস্যা তোমাদের মনের ৷” ক্লাসে ব্ল্যাক বোর্ডে লেখা, শিক্ষকের আওয়াজ থাকলেও পড়ুয়ার কান অনেক সময় সেদিকে থাকে না ৷ আর কানের তো কোনও দরজা, জানলা নেই, যে তাকে বন্ধ করে রাখা যাবে ৷ তাই অনলাইনে পড়াশোনাটা শুধুমাত্র মাধ্যমের পরিবর্তন মাত্র, আর কিছুই নয় ৷ মনকে একাগ্র করলেই সব সমস্যা হাওয়া হয়ে যাবে ৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি অনলাইন ও অফলাইন পড়াশোনার দু’টি দিক তুলে ধরেন উপস্থিত পড়ুয়াদের কাছে ৷ তিনি বলেন, “অনলাইন মাধ্যম কিছু পাওয়ার এবং অফলাইন তৈরি করার ৷ অর্থাৎ অনলাইনে মোবাইলে দুনিয়ার অনেক কিছুর খোঁজ পাওয়া যায় সহজেই ৷ সেগুলো মোবাইলে সংগ্রহ করে রাখা যায় ৷ অফলাইনে সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে নিয়ে যাওয়া যায় ৷” প্রশ্ন আসে ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি নিয়েও ৷ প্রধানমন্ত্রী জানান, এই শিক্ষা নীতির খসড়া অনেকে মিলে তৈরি করেছেন ৷ তিনি বলেন, “গত 6-7 বছর ধরে এ নিয়ে চর্চা চলছে ৷ আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষক, পড়ুয়া সকলের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি ৷ এর মধ্যে আধুনিক বুদ্ধিজীবীরাও রয়েছেন ৷” এই নীতির লক্ষ্য পড়ুয়াদের মনের বিকাশ সাধন ৷ পরীক্ষা নিয়ে রীতিমতো চাপে থাকে পড়ুয়ার দল ৷ বাবা-মার আশা পূরণ করতে গিয়ে একে উৎসব হিসেবে ভাবাটা কঠিন তাদের কাছে ৷ এক ছাত্রীর এই প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল হাততালিতে গমগম করে ওঠে অনুষ্ঠানকক্ষ ৷ এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি অভিভাবকদের জানান, তাঁরা যেন তাঁদের অপূর্ণ আশাগুলি সন্তানের মধ্যে দিয়ে পূরণের চেষ্টা না চালান ৷ আর এ যুগে শিক্ষকরাও শুধুমাত্র সিলেবাস শেষ করাতেই সীমাবদ্ধ ৷ আগেকার দিনে শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের পরিবারের একটা সম্পর্ক ছিল ৷ এতে ছাত্রছাত্রীরা কী করতে চায় এবং পরিবার কী চায়, এই সব কিছু জানতে পারতেন শিক্ষক ৷ এখন সেই সময় অতীত ৷ কিন্তু তিনি অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছে আর্জি জানান, তাঁরা যেন ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের স্বপ্ন সফল করতে উৎসাহ দেন ৷