‘সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে বিজেপির বুলডোজার নীতি মানব না।’ বুধবার এই কড়া মন্তব্যে শীতকালীন অধিবেশনে দলের অবস্থান জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘কেউ যেন ভুলে না যায় যে, চিরকাল একটাই দল ক্ষমতায় থাকবে না। রাজনৈতিক দল আসবে, যাবে। কিন্তু সংসদ থাকবে। সংবিধান থাকবে। তাই এখন যারা ক্ষমতায় আছে, তারা যদি ভাবে যে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলে যা ইচ্ছে তাই করব, কোনও আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করিয়ে নেব, রাজ্যের উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করব, বিরোধী রাজ্যগুলিকে বুলডোজ করব, তাহলে ভুল ভাবছে। ক্ষমতা আছে বলে কেউ যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদারদের মতো দলের এমপিদের পাশে নিয়ে তৃণমূলনেত্রী আরও বললেন, ‘সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলছে। তাই দলের এমপিদের বলেছি, প্রতিবাদ করতে হবে। তবে কনস্ট্রাক্টটিভলি, বোল্ডলি বাট কুললি।’ ঠান্ডা মাথায় নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। এ ব্যাপারে বিরোধীরা আমাদের সঙ্গে এলে আরও ভালো হয়। জাতীয় ইস্যুতে বিরোধীদের সঙ্গে একজোট হয়ে প্রতিবাদে আমরা আছি। অন্যদেরও সহযোগিতা করব।’ সংসদে এবার ১৬টি নতুন বিল আনছে মোদি সরকার। তার তালিকা দেখে অসন্তুষ্ট মমতা। ৫৮ লোধি এস্টেট, সৌগত রায়ের সরকারি বাংলোয় এদিন দলীয় এমপিদের নিয়ে স্ট্র্যাটেজি বৈঠক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সংসদে কী কী বিষয় নিয়ে সরব হতে হবে, বৈঠকে এমপিদের সেই নির্দেশ দেন মমতা। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই বৈঠকেই ত্রিপুরার ছ’জন কংগ্রেস নেতানেত্রী তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের নিয়ে আসেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে দলকে মমতা বলেছেন, ‘মূল্যবৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, ইতিহাস বিকৃতি, সার ঘাটতি, গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ, মহিলাদের উপর অত্যাচার, গঙ্গা ভাঙনের মতো ইস্যুতে সরব হতে হবে। স্রেফ রাজ্যের ইস্যুই নয়। জাতীয় ইস্যুতেও বিজেপিকে সংসদে চেপে ধরতে হবে।’ সেই মতো লাদাখে ভারত-চীন সীমান্ত ইস্যুর কথাও তুলতে দলকে নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রের বর্তমান সরকার বিরোধীদের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে অপব্যবহার করছে বলেও দলীয় বৈঠকে সরব হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। বলেছেন, ‘এই সরকারটা হল বাই দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি, অব দ্য এজেন্সি। তাই এ ব্যাপারে সরব হতে হবে।’