: মাত্র একমাসের ‘প্রকল্প’। আর তাতেই নাকি ভুরি ভুরি লাভ। কারণ, মূলধনের সঙ্গে ৩১ দিনের মাথায় মিলবে ৪০ শতাংশ সুদ! এই টোপ দিয়ে নিউটাউন শহরে গজিয়ে উঠেছিল একটি প্রতারণা চক্র। লোভে পড়ে বহু মানুষ তাদের কাছে টাকা গচ্ছিতও রেখেছিলেন। কিন্তু, ৪০ শতাংশ সুদ তো দূরের কথা। ৩১ দিন পর মেলেনি মূলধনও। অবশেষে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখা নিউটাউনে হানা দিয়ে সেই চক্রের ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ধৃতরা দু’কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের প্রতারণা নতুন নয়। এর আগেও বহু চিটফান্ড সংস্থা এভাবে ব্যাঙ্কের তুলনায় চড়া সুদ দেওয়ার টোপ দিত। সেখানে হাজার হাজার আমানতকারী টাকা গচ্ছিত রেখে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। একাধিক চিটফান্ড কর্তা গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেখানে টাকা জমা করার মানসিকতা কমে এসেছিল। কিন্তু, অনেকে এখনও বাস্তবের অভিজ্ঞতার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারেননি। ফলে এই ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। নিউটাউনের এই ঘটনা যার অন্যতম উদাহরণ। দেশের কোনও ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ সুদ দেয় না!
বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার এক বাসিন্দা নিউটাউনের এই প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছিলেন। টাকা না পাওয়ায় তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারপর তিনি গত ২ নভেম্বর নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, নিউটাউনের একটি বহুতলে তারা রীতিমতো অফিস ভাড়া নিয়ে এই চক্র খুলে বসেছে। বৃহস্পতিবার সেখানে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা অফিসাররা ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ধৃতরা ‘পুঁজি’ নামে একমাসের জন্য ওই প্রকল্প চালু করেছিল। মূলত, অল্পদিনে বেশি লাভের আশায় অনেকেই সেখানে লগ্নি করেন। এক মাস পর ৪০ শতাংশ সুদ সহ টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিত তারা। যাঁরা লগ্নি করেছেন, তাঁদের সবাইকেই বলা হয়েছিল, টাকা জমা দেওয়ার পর ৩১ দিনের মাথায় এসে ম্যাচুইরিটির টাকা নিয়ে যেতে হবে। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, এফআইআরে নাম থাকা ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকার প্রতারণা হয়েছে। তদন্ত চলছে।