গত তিনমাস ধরে জাতিগত হিংসায় অগ্নিগর্ভ বিজেপি শাসিত মণিপুর। অশান্তি শুরু হওয়ার পরই গত ৬ মে সাংবাদিক অ্যাটম সমরেন্দ্র সিং নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। এতগুলি দিন কেটে যাওয়ার পরও তাঁর কোনও হদিশ নেই। শুধু তিনিই নন। তাঁর সঙ্গে খোঁজ মিলছে না ৪৮ বছরের ইয়ুমখাইবাম কিরণকুমার সিং এবং ১৭ বছরের সমাজকর্মী হিরম লুয়াংবিরও। শুধু তাঁরাই নয়, আরও অনেকেই উধাও। সংখ্যাটা অন্তত ৩০। সাংবাদিক সমরেন্দ্র সিংয়ের পরিবারের দিন কাটছে প্রবল উৎকন্ঠায়। তাঁর স্ত্রী কবিতা জানান, বন্ধু কিরণকুমারকে সঙ্গে নিয়ে কাংপোকপি জেলার সীমানা গ্রাম সহেলিবুং এলাকায় ড্রাইভে গিয়েছিলেন সমরেন্দ্র। সেইদিন থেকে দু’জনেরই ফোন বন্ধ। অন্যদিকে নিটের কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ১৭ বছরের কিশোরী হিজম। সঙ্গে ছিল তার বন্ধু ১৭ বছরের ফিজম হেমনজিৎ। সেই যে বাইক নিয়ে বেরিয়েছিল, তারপর থেকে তাদের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। কিশোরীর মা জয়শ্রী বলেন, ‘মেয়ে ফিরছে না দেখে আমি ফোন করেছিলাম। সে ফোন ধরেওছিল। সে তখন নামবোলে। গলা শুনে বুঝতে পেরেছিলাম, মেয়ে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছে। নামবোলে সে কীভাবে পৌঁছল, তা জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই ফোন বন্ধ হয়ে যায়। যা আজও সুইচড অন হয়নি।’ এই তিনজনের মতোই গত তিন মাসে প্রায় ৩০ জন মণিপুর থেকে নিখোঁজ। পরিবারের লোকজনদের আতঙ্ক, প্রিয়জন আদৌ বেঁচে আছে, না মারা গিয়েছে, তা তাঁরা বুঝতেও পারছেন না। সমাজসেবী সংগঠনগুলির উদ্যোগে বহু পরিবার পুলিসের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ইম্ফলের হাসপাতালগুলির মর্গে মোট ৪৪ জনের মৃতদেহ রয়েছে। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। আগামী ৩ আগস্ট সেই সব মৃতদেহ সৎকার করা হবে বলে প্রশাসনের সূত্রে খবর।