শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স হয়ে আলিপুরদুয়ার-গামী রেল পথে ট্রেনের ধাক্কায় আবারও ৩টি হাতির মৃত্যু হল। এবার ঘটনাটি ঘটেছে রাজাভাতখাওয়ার শিকারি গেট এলাকায়। জানা গিয়েছে সোমবার সকাল প্রায় ৭টা ২০ নাগাদ রেল লাইন পেরোনোর সময় শিলিগুড়িগামী একটি মালগাড়ি হাতি গুলিকে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনাস্থলেই শাবক সহ ৩টি হাতির মৃত্যু হয়৷ ধাক্কা লাগার পর ট্রেনটি সেখানেই দাঁড়িয়ে যায়, দেখা যায় রেল লাইনের ধারে পড়ে রয়েছে একটি পূর্ণবয়স্ক ও একটি সাব-অ্যাডাল্ট হাতির দেহ। দুর্ঘটনার তীব্রতায় রেলের বগির তলে আটকে যায় একটি হস্তিশাবকের মৃতদেহ। এর পরই এই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বনদপ্তর ও রেল দপ্তরের আধিকারিকেরা। তাঁরা মৃতদেহগুলি সড়িয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।
হাতির মৃত্যুর জন্য এই রেল লাইনটি কুখ্যাত, হাতি ছাড়াও এই পথে রেলের ধাক্কায় চিতাবাঘ, বাইসন, অজগর, হরিণ, শকুন সহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। মিটার গেজ থাকাকালীন শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারগামী এই রুটে ১৯৭৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ২৭ টি হাতির মৃত্যু হয়। গেজ পরিবর্তনের পর ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪৩ টি হাতি, ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩০ টি হাতির মৃত্যু হয়। পরিবেশপ্রেমীদের অনেকের দাবি, ওই রুটে রেলের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের বেশি হওয়া কোনও ভাবেই কাম্য নয়। বিশেষ পরিস্থিতি ও সময়ে কোনও বাফার জোনে তা আরও নিয়ন্ত্রণ করার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রসঙ্গত বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল হাতি লাইনের কাছে আসতে পারে ভোর ৫ নাগাদ। কিন্তু তার পরও দুর্ঘটনা ঘটে সকাল ৭.২০ মিনিটে। সে সময় ট্রেনের গতিবেগ ট্রেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার।