সেবি চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচের উপর চাপ আরও বাড়ছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা শুক্রবার মাধবীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগ এনেছেন। এদিকে সূত্রের খবর, সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) সেবি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখবে এবং তাঁকে চলতি মাসেই তলব করা হতে পারে। ২৯ অগস্ট পিএসি-র প্রথম বৈঠকে একাধিক সদস্য সেবি-র কাজকর্ম এবং মাধবীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির তদন্তের দাবি করায় কমিটির অ্যাজেন্ডায় বিষয়টি যুক্ত করা হয়। প্রসঙ্গত, পিএসি-র চেয়ারম্যান কংগ্রেস নেতা কেসি বেনুগোপাল এবং কমিটিতে এনডিএ ও ইন্ডিয়া ব্লকের সদস্যরা রয়েছেন। তবে পিএসি-র অ্যাজেন্ডায় নির্দিষ্ট ভাবে সেবি বা তার চেয়ারপার্সনের উল্লেখ নেই। অ্যাজেন্ডায় রয়েছে, ‘সংসদে আইন এনে যে সব নিয়ামক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলির পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করা হবে।’ তবে আধিকারিকদের বক্তব্য, সেবি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে, তারই প্রেক্ষিতে ২৯ অগস্টের বৈঠকে অ্যাজেন্ডায় স্বতোঃপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, ‘কমিটির অনেক সদস্য সেবি ও সেবি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের আধিকারিকদের চলতি মাসেই তলব করা হতে পারে।’ এদিকে শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা অভিযোগ করেছেন, মুম্বইতে মাধবী ও তাঁর স্বামীর মালিকানাধীন একটি সম্পত্তি ক্যারোল ইনফো সার্ভিসেস লিমিটেড নামে এক সংস্থাকে ভাড়ায় দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রথমে সেবি-র হোল-টাইম ডিরেক্টর ও পরে নিয়ামক সংস্থার চেয়ারপার্সন পদে থাকা মাধবী ‘ক্যারোল ইনফো সার্ভিসেস লিমিটেড’-এর কাছ থেকে ২.১৬ কোটি টাকা ভাড়া পেয়েছেন। পবনের মতে, এটা সম্পূর্ণ স্বার্থের সংঘাত এবং দুর্নীতি। পবন বলেন, ‘ক্যারোল ইনফো সার্ভিসেস লিমিটেড এবং ওকহার্ড লিমিটেডের প্রোমোটার একই। আর ওকহার্ডের ব্যাপারে সেবি ধারাবাহিক ভাবে নির্দেশ দিচ্ছে এবং তাদের বিষয়গুলি দেখছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘সেবি-র চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ এবং সেই সেবি-ই ওকহার্ডের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখছে। ফলে, এটা ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের ঘটনাও। তাঁর নেতৃত্বাধীন সেবি ওকহার্ডের ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগের তদন্ত করছে। এটা স্বার্থের সংঘাত। আমি বলব এটা দুর্নীতি। শুধুমাত্র স্বার্থের সংঘাত নয়, আগাগোড়া দুর্নীতি।’ সমস্ত অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছে কংগ্রেস। লোকসভার বিরোধী দলের বক্তব্য, ভারতের শেয়ারবাজারের বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে জাতীয় স্বার্থেই নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন। কোটি কোটি লগ্নিকারীদের আস্থা বজায় রাখতে সেবি-কে যে কোনও অন্যায়ের সন্দেহ থেকে মুক্ত রাখার উপর জোর দিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন, সেবি-র স্বচ্ছতা ও বিশুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার আর কত প্রমাণ দিতে হবে। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে ২০১৭ সালে মাধবী যখন সেবি-তে যোগ দেন তখন থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি সেবি থেকে বেতন নেওয়ার পাশাপাশি আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কে একটি ‘অফিস অফ প্রফিট’ পদেও রয়েছেন। তবে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর মাধবী অবসর নেওয়ার পর তাঁকে কোনও বেতন বা সংস্থার শেয়ার দেওয়া হয়নি। যদিও এ ব্যাপারে মাধবী নীরব।