আইনের চোখে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেপ্তার ‘ত্রুটিপূর্ণ’! এমনটাই দাবি করছেন কলকাতা পুলিশের আইনজ্ঞরা। আর জি কর কাণ্ডে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে টালা থানার ওসিকে শনিবার সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তা আইন মেনে করা হয়নি বলেই দাবি পুলিশের। এই খবর কলকাতা পুলিশের এক বিশেষ সূত্রের। কলকাতা পুলিসের এক আইনজ্ঞ জানান, কর্তব্যরত একজন পুলিশ অফিসারকে আইনে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে যে, ‘সরকারি কর্তব্য পালনে ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য একজন পুলিশ অফিসারকে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করা যায় না।’ তেমন একজনকে নিতান্তই গ্রেপ্তার করতে হলে, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। আর অভিযুক্ত ব্যক্তি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী হলে তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রয়োজনীয় অনুমতি গ্রহণ আবশ্যক। এসআই পদমর্যাদা থেকে শুরু করে একজন পুলিশ অফিসার এই রক্ষাকবচ পাবেন শুধুমাত্র ‘অন-ডিউটি’ অবস্থাতেই। লালবাজারের এক সূত্র জানাচ্ছে, পূর্বতন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৫ ধারায় এই সুরক্ষা পুলিশ অফিসারদের দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ৪২ নম্বর ধারায় এই রক্ষাকবচ তাঁদের দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, অতীতে নন্দীগ্রাম গুলি-কাণ্ডে অভিযুক্ত আইপিএস সহ পুলিশ
অফিসারদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের আগে এই সিবিআই নিয়েছিল রাজ্য সরকারের অনুমতি। সেই একই সংস্থা এবার কী করে এমন ভুল করল, তা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। কিন্তু কোনও এক রহস্যজনক কারণে আর জি কর কাণ্ডে রাজ্য সরকারের এই অনুমতি সিবিআই নেয়নি বলেই দাবি কলকাতা পুলিশের। ফলে আগামী দিনে আইনি লড়াইতে টালা থানার ওসির এই গ্রেপ্তার কতটা ধোপে টিকবে, তা নিয়ে আইনজ্ঞদের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে কলকাতা পুলিশ। সোমবার তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। সোমবার কলকাতার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (চতুর্থ) ভি সলোমান নিশাকুমার, ডেপুটি কমিশনার (ইস্ট ডিভিশন) আরিশ বিলাল, ডেপুটি কমিশনার (এসএসডি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত টালা থানার ওসির বাড়িতে যান এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ দিন সলোমান নিশাকুমার বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি অভিজিৎ মণ্ডল নির্দোষ।’ তিনি আরও বলেন, ‘টালা থানার ওসি খবর পাওয়ার পর ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছন। স্বচ্ছভাবে তিনি তদন্ত করেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’ কলকাতা পুলিশ অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে রয়েছে বলে বার্তা দেন লালবাজারের ওই কর্তা।