জিরিবাম জেলায় ছ’জনের অপহরণ এবং ৩ খুনের বিচার চেয়ে লাগাতার বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলছে মণিপুরে। সেই আবহেই শনিবার বিক্ষুব্ধরা দল বেঁধে পৌঁছে গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের বাড়ির সামনে। দরজা ভাঙতে চেয়েছিল উন্মত্ত জনতা। নিরাপত্তারক্ষীরা কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। রাতে সে সময়ে বাড়িতে বীরেন ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। ইম্ফলে কারফিউ জারি এবং সাতটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখার পরেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠে জনগন। বিক্ষোভ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে শনিবার বিকেলেই রাজধানী ইম্ফলে কারফিউ জারি করে সরকার। তার পরেও বিক্ষোভ থামেনি। রাতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং তিন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর পরেই উত্তেজিত জনতা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যায় বলে অভিযোগ। বীরেন রাতে আর বাড়িতে ফেরেননি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেই রয়েছেন তিনি। শনিবার মণিপুরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সাপম রঞ্জন, উপভোক্তা বিষয়কমন্ত্রী এল সুসীন্দ্র সিংহ বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের জামাতা আরকে ইমো-সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের দাবি, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুন করায় অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে ইম্ফলে কারফিউ জারি করা হয়। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাগত একাধিক বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে। রবিবার সকালে মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ নভেম্বর রাতে উত্তেজিত জনতা মণিপুরের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়কের বাড়ি এবং সরকারি সম্পত্তিতে হামলা চালিয়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। রাতের ঘটনায় আট জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং বিষ্ণুপুর থেকে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক পিস্তল, কার্তুজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকায় কার্ফু জারি রয়েছে। আপাতত দু’দিনের জন্য এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।