কলকাতা

আজ দুপুরে আরজি কর কাণ্ডে সাজা ঘোষণা

ঘটনার পর ১৬৩ দিন অতিক্রান্ত। আজ, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করবে শিয়ালদহ আদালত। দোষীর বক্তব্যও এদিন শোনা হবে বলে জানিয়েছেন শিয়ালদহের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলে দেওয়া এই মামলায় বিচারক কী সাজা দেন দোষীকে, সেদিকেই আপাতত নজর থাকবে সবার। কলকাতা পুলিসের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গত শনিবারই এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। তখনই এজলাসে সঞ্জয় বলে ওঠে, ‘আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’ বিচারক তাকে জানিয়ে দেন, সমস্ত তথ্যপ্রমাণ তার বিপক্ষে। সে দোষী। আমৃত্যু কারাদণ্ড বা ২৫ বছর জেল বা সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে তার। প্রসঙ্গত, বারাসত জেলায় বিশেষ আদালতে বিচারক থাকাকালীন অনির্বাণ দাস মাদক সংক্রান্ত মামলায় এক অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।  আর জি কর হাসপাতালে জুনিয়র মহিলা চিকিত্সককে খুন-ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে ৯ আগস্ট। উত্তাল হয় বাংলা সহ গোটা দেশ। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার কলকাতা পুলিসের কাছ থেকে সিবিআইয়ের কাছে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুন-ধর্ষণের অভিযোগে যে সঞ্জয় রায়কে কলকাতা পুলিস গ্রেপ্তার করেছিল, সিবিআই তাকেই দোষী বলে চিহ্নিত করে চার্জশিট দেয়। ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসক মহল যে আন্দোলন শুরু করেছিল, এখনও তা চলছে টিমটিম করে। আজও শিয়ালদহ আদালতের সামনে জমায়েতের ডাক দিয়েছে অভয়া মঞ্চ। আন্দোলনকারীদের দাবি, শুধু সঞ্জয় নয়, আরও কেউ এই নারকীয় ঘটনায় যুক্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষের দাবি, সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চাই। কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের সময়ও প্রকাশ্যেই স্বাভাবিক ভঙ্গীতে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল সঞ্জয়কে। পুলিশি জেরাতেও সে একেবারে নির্লিপ্ত ছিল। শিয়ালদহ বিশেষ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস শনিবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩, ৬৪ ও ১০৩(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে সঞ্জয়ের। কিন্তু অবাক ঘটনা হচ্ছে এখনও তার মধ্যে কোনও হেলদোল নেই। রবিবার প্রেসিডেন্সি জেলের ৬ নম্বর সেলে একেবারেই ভাবলেশহীন ছিল সে। কৃতকর্মের জন্য ইতিমধ্যে তার মৃত্যুদণ্ড হলেও কোনওরকম অনুশোচনা হবে না বলে জানিয়েছে সঞ্জয়ের পরিবার। ওই নৃশংস ঘটনায় ফাঁসি চেয়ে পথে নেমেছেন ডাক্তার থেকে সাধারণ মানুষ অনেকেই। এমনকী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও ফাঁসির দাবিতে পথে নেমেছিলেন। কাল সারা দেশের নজর থাকবে শিয়ালদহ আদালতের দিকে। সাজা ঘোষণার আগে ঠিক সারাদিন কেমন কাটল সঞ্জয়ের? জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সঞ্জয়কে সেলের বাইরে বের করা হয়েছিল। অন্য বন্দিদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলেছে সে। স্বাভাবিক খাবারও খেয়েছে।শনিবার রায় ঘোষণার সময় সঞ্জয় বিচারকের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলেছিল, আমি কিছু করিনি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।