সংসদে নাগরিক সংশোধনী বিলে বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে বিহারের শরিক নীতীশের দল। কিন্তু সপ্তাহ কাটার আগেই একশো ডিগ্রি ঘুরে গেলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তারা নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতা করতে চলেছে। নীতীশের ভোলবদলের নেপথ্যে রয়েছেন তৃণমূলের রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোর। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে লোকসভা ও রাজ্যসভায় কেন্দ্রের শাসক দলের পাশে দাঁড়িয়েছে বিহারে বিজেপির শরিক জেডিইউ। নাগরিকপঞ্জি নিয়েও নীতীশের সমর্থন পেয়েছেন মোদি। কিন্তু, প্রথম থেকে এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে গিয়েছেন জেডিইউ-র সহ-সভাপতি প্রশান্ত কিশোর। তাঁর টুইট বোমায় বিদ্ধ হয়েছে জেডিইউ। গত ৯ ডিসেম্বর প্রশান্ত কিশোর টুইটারে লিখেছিলেন, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্বের সমর্থন দিচ্ছে জেডিইউ। এটা অত্যন্ত বিরক্তিকর। দলের সংবিধানের প্রথম পাতাতে রয়েছে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’। নেতৃত্বের গান্ধীর আদর্শে চলা উচিত। ” ১১ ডিসেম্বর প্রশান্ত টুইট করেছিলেন, ”২০১৫ সালে তাঁদের উপরে ভরসা রেখেছিলেন মানুষ। একবার অন্তত নেতৃত্বের তাঁদের কথা ভাবা উচিত।” প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছিল জেডিইউ-র অন্দরে। এমন আবহে শনিবার বিহারের পটনায় নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রশান্ত। তিনি জেডিইউ-র সহ-সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁকে বিরত করেন নীতীশ। ওই বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পিছনে বিজেপির আসল উদ্দেশ্য বুঝিয়ে বলেন প্রশান্ত। সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, নাগরিকপঞ্জির জন্য আনা হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। নাগরিকপঞ্জি কার্যকর করাই বিজেপির আসল লক্ষ্য। আর সেটা হলে গরিব ও প্রান্তিক মানুষ অসুবিধায় পড়বেন। এর পাশাপাশি সংখ্যালঘু ভোটও মুখ ফেরাবে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন,”এনআরসি-তে সায় নেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর। এনআরসি না হলে নাগরিক সংশোধনী আইনে কোনও সমস্যা নেই। কারণ এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সঙ্গে এনআরসি-র জুড়ে দিলে বিপজ্জনক।” অবশেষে প্রশান্ত কিশোরের দাবিতে সিলমোহর দিয়েছেন জেডিইউ-র জাতীয় মুখপাত্র কেসি ত্যাগী।