পুরুলিয়াঃ কলকাতার ছাড়িয়ে এবার নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জেলাসফর শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া দিয়েই আজ সোমবার থেকে সেই সফরের শুরু। গতকাল হেমন্ত সোরেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ঝাড়খণ্ড গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারপরেই তিনি চলে আসেন পুরুলিয়ায়। এদিন সিএএ ও এনআরসি-র প্রতিবাদে পুরুলিয়া টাউনে মিছিল করে ৫ কিলোমিটারের হাঁটেন তিনি। সেই মিছিল থেকেই গোটা দেশকে তিনি বার্তা দেন- বিজেপিকে গোটা দেশে একঘরে করে দেওয়ার। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল পুরুলিয়া। তাই এই জেলাকে দিয়েই সফর শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বলেই মত একাংশে। এদিন মিছিল শুরুর আগে সমাবেশ থেকেই আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈধভাবে এদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের নাগিরকত্ব কেড়ে নিতে চাইছে বিজেপি। সবার কাছে আমার অনুরোধ, একজোট হয়ে তাই বিজেপিকেই গোটা দেশে একঘরে করে দিন।’ পাশাপাশি আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ‘সিএএ বাতিল না হলে আমি আন্দোলন থামাব না। আপনারা শুধু ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে কিনা দেখে নিন। বাকি আমি দেখে নেব। বাংলা থেকে কাউকে তাড়াতে দেব না। দেশ থেকে তাড়াতে দেব না।’ সদ্য এনপিআর চালুর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুরু থেকেই রাজ্যে তা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গ। সেই প্রসঙ্গে আজ ফের একবার তিনি জোর গলায় বলেন, ‘বাংলায় এনপিআর হবে না।’ এছাড়াও তিনি এদিন বলেন, “১৮ বছরের ছেলেমেয়েদের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। আর ওরা আন্দোলন করতে পারবে না? ছাত্রছাত্রীদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। হোস্টেলে ঢুকে মারধর করছে তারা। এনআরসি করে দেশ থেকে তাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আমাদের সাংসদদের লখনউতে ঢুকতে দেওয়া হল না। এদিকে বিজেপি রাজ্যে একের পর এক মিছিল করে চলেছে। তাহলে দেখুন গণতন্ত্র কোথায় আছে? এই আন্দোলন সব রাজ্যে হচ্ছে। এই আন্দোলন আপনার ঠিকানার আন্দোলন। সবাই একজোট হন, বিজেপিকে একা করে দিন।” পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টিতেই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ফলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেখানে যে কোনও মূল্যে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি প্রতিবাদে বিক্ষোভ সেই লক্ষ কতটা পূরণ করবে, সেটাই এখন দেখার।