জেলা

মধ্যমগ্রামের ১০ নম্বর ওয়ার্ড ও কাঁকিনাড়ার একটি এলাকা সিল করে দিল প্রশাসন

বারাসত: মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর চিহ্নিত করে সমস্ত দিক থেকে কার্যত সিল করে দিয়েছে পুলিস ও প্রশাসন। করোনা ভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকাতে এই ওয়ার্ডে ঢোকার সমস্ত রাস্তা গার্ডওয়াল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাইরের কোনও ব্যক্তি যাতে এই ওয়ার্ডে না ঢোকে, তা নিশ্চিত করতে ওয়ার্ডে ঢোকা ও বের হওয়ার প্রতিটি পয়েন্টে পুলিস ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। শুধুমাত্র এই ওয়ার্ডের জন্য একটি পৃথক নম্বর দেওয়া হয়েছে এবং কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। পাশাপশি কাঁকিনাড়ার নয়াবাজার এলাকার পাঁচ নম্বর গলিকে হটস্পট চিহ্নিত করে সিল করে দেওয়া হয়েছে। সিল করা হয়েছে পাঁচ নম্বরের সংলগ্ন চার ও তিন নম্বর গলিও। শনিবার সকাল থেকে দোকানপাট সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির বাইরে বের হতে সকলকে নিষেধ করা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে পুলিস ও পুরসভার পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। পুরসভার কর্তারা জানান, প্রতিটি বাড়িতে হোম ডেলিভারি যাবে।
জেলা পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মধ্যমগ্রামের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বাইরের কারও প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে না বের হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। মানুষের কোনও প্রয়োজন হলে আমাদের বিশেষ নম্বরে ফোন করতে পারবেন। ওই নম্বর এলাকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশেষ টিম ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যমগ্রামের  বঙ্কিমপল্লী পুর্ব ও দক্ষিণ রামমোহন এস্টেট, বোসবাগান, পুর্বালয়, পুর্বাশা ও বিজয়নগর নিয়ে তৈরি হয়েছে ১০ নম্বর ওয়ার্ড। প্রসঙ্গত, এই ওয়ার্ডের বঙ্কিমপল্লির বাসিন্দা তথা পুরসভার এক কাউন্সিলার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মধ্যমগ্রাম পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল নিমাই ঘোষ বলেন, রবিবার থেকে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের জ্বর, সর্দি, কাশি আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হবে। ওই এলাকায় ফিবার ক্লিনিকও করা হবে। পুরসভাতে একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিম ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের যে কোনও প্রয়োজনে পদক্ষেপ নেবে। বারাকপুরের খবরে জানা গিয়েছে, কাঁকিনাড়ার পাঁচ নম্বর গলির বাসিন্দা ৬০ বছরের এক বৃদ্ধকে গত ৬ এপ্রিল জ্বর সর্দি কাশি উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করা হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। শুক্রবার রিপোর্ট আসে তাঁর করোনা পজিটিভ।
কাঁকিনাড়ার পাঁচ নম্বর গলি ভাটপাড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড। পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড পুরো স্যানিটাইজ করা হয়েছে। ৫, ৪ ও ৩ নম্বর গলি  সিল করা হয়েছে। সকলেই গৃহবন্দি থাকবেন। পুরসভা ও পুলিসের তরফে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে, উত্তর দমদম পুরসভা এলাকার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ শিবাচল এলাকাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী দিনে লকডাউনে সেখানে আরও কড়াকড়ি করা হবে। শনিবার বিকেলে সেখানে পরিদর্শনে যান বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সুবোধ চক্রবর্তী ও প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, শিবাচল এলাকায় পরিস্থিতি বিবেচনা করে লকডাউন আরও কড়াকড়ি করা হবে। উত্তর দমদমে একজন চিকিৎসক করোনাতে আক্রান্ত। তার সংস্পর্শে আসা দশটি পরিবারকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এদিকে, এদিন নাগেরবাজার থেকে কাজিপাড়া পর্যন্ত এলাকা স্যানিটাইজ করা হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার পুরসভার চেয়ারম্যান পাচু রায় জানিয়েছেন, যে সমস্ত কর্মী  স্যানিটাইজ করা, বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ করা, সহ করোনা মোকাবিলায় সরাসরি জড়িত, তাদের পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত দেওয়া হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, বরানগরের ১১ নম্বর এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডই সিল করে দেওয়া হয়েছে।