কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল, এক বিজেপি নেতা ঘৃণাসূচক মন্তব্য করলেও ফেসবুক তাতে গুরুত্ব দেয়নি। এরপর ফেসবুকের এক প্রাক্তন কর্মী অভিযোগ করলেন, দিল্লি ভোটের আগে ফেসবুকে একটি রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক কাজ করছিল। ভোটারদের প্রভাবিত করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। ফেসবুক সব জেনেও ওই নেটওয়ার্কের কার্যকলাপ গোপন রেখেছে। আমেরিকার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাজফিড’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ফেসবুকের ওই প্রাক্তন কর্মী পেশায় ডাটা সায়েন্টিস্ট। ৬৬০০ শব্দের মেমো দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, দিল্লি ভোটের সময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক অনৈতিক কাজ করেছিল। এর আগে ফেসবুক বিতর্কে জড়িয়েছিল বিজেপি। এবার বিতর্কে জড়াল আম আদমি পার্টিও। কারণ গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির ভোটে তারাই জিতেছিল। বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, একটি অতি দক্ষ রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক ফেসবুককে নিজেদের কাজে লাগিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দিল্লির ভোটকে প্রভাবিত করা। ভোটে জিতেছিল আম আদমি পার্টি। মনে হচ্ছে ফেসবুক ওই রাজনৈতিক নেটওয়ার্কের কথা জানত। কিন্তু তারা বাইরে সেকথা প্রকাশ করেনি। তাদের এখন অনেক কিছু নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে। তাদের বলতে হবে, তারা কি সকলের ক্ষেত্রে একই নীতি নিয়ে চলে?’ আম আদমি পার্টির মুখপাত্র সঞ্জয় সিং এই অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করেননি। ফেসবুকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁদের প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে যাতে কেউ অনৈতিক কাজ করতে না পারে, সেজন্য তাঁরা একটি নজরদার টিম বানিয়েছেন। তাতে আছেন বিশেষজ্ঞরা। ওই টিম ফেসবুক থেকে ১০০ টির বেশি নেটওয়ার্ক মুছে দিয়েছে। ইন্টারনেট অ্যাকটিভিস্টরা বলছেন, এর মাধ্যমে ফেসবুক নিয়ে আর একদফা রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হল। তাঁরা মনে করেন, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট পলিসি থাকা প্রয়োজন। ফেসবুকের মতো সংস্থার কাজকর্মে যদি কোনও অস্বচ্ছতা থাকে, তারা যদি ভোটের সময় রাজনৈতিক প্রচারে সহায়তা করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন নামে এক সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অপর গুপ্ত বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার ওপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। আসলে ফেসবুকের কাজকর্মে কোনও স্বচ্ছতা নেই। তা থেকেই যাবতীয় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’